আসুন তরিকার ভাই রাজশক্তির মিথ্যা হাদিসের আসল সত্য জানি :
দেখুন মিথ্যা হাদিস:- ”রাসুলল্লাহর (আ) মাতা পিতা উভয়ই কাফের ছিলেন । তাহার পালনকারী চাচা
আবু তালেব এমনই শক্ত প্রকৃতির কাফের ছিলেন যে, সারা জীবন রাসুলের সংশ্রবে থাকিয়াও তাহাকে
চিনিতে পারে নাই এবং নবী বলিয়াস্বীকার করেন
নাই যদি ও ভাতিজা হিসাবে তাহাকে অত্যনÍ ভালবাসিতেন । ইহার ফলে তিনি তাহাকে ও তাহার প্রচারিত ইসলামকে শক্তিশালী আশ্রয়
দান করিয়াছিলেন । তিনি এমন কাফের ছিলেন যে, মৃত্যুর সময়ও রাসুলের বহু অনুরোধ সত্ত্বেও ইসলামের উপর এবং নবীর
উপর ইমান আনার সৌভাগ্য তাহার নাই। শয্যাপার্শ্বে বসিয়া রাসুল বহু অনুরোধ করিলেন শুধু একবার কানের
কাছে ”লা ইলাহা ইলল্লাাহু মোহাম্মাদুর রাসুলল্লাহ” মুখে উচ্চারন করিবার জন্য কিন্তু কিছেতেই তিনি তাহা
উচ্চারন করিতে রাজি হইলেন না।”
আসল ঘঠনা কি আসুন আলোচনা করি :-
“তাহ্ক্বীকুল মাক্বাম আলা কিফাইয়াতিল আওয়াম”কিতাবে উল্লেখ রয়েছে , নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেন,
অর্থ: “আমি সব সময় পবিত্র পুরুষদের পৃষ্ঠ মুবারক হতে পবিত্রা মহিলাগণ উনাদের রেহেম শরীফে
স্থানান্তরিত হয়ে আসতেছিলাম।” (সুবহানাল্লাহ)।
অনেকে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ব-পুরুষদের মুশরিক বলতে
চায় (নাউযুবিল্লাহ মিন জালিক)।এটা কুফরী আকিদা, কারণ মুশরিকরা নাপাক,নবীজি কাফিরদের মধ্যে দিয়ে এসেছেন।(নাউযুবিল্লাহ)। উনার পবিত্রতম চরিত্রে
কালিমা লেপন করতে কাফিররাই এটা রটিয়ে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পূর্ব
পুরুষগণ জান্নাতি ও পবিত্র তো অবশ্যই। বরং উনারা ছিলেন ঐ জামানার নবী-রাসূল অথবা শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব।(সুবহানাল্লাহ)
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম পর্যন্ত
সকল (৫০ জন) বংশ-পুরুষের নাম
১। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিইয়ীন হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
২। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম। হাদীস শরীফে আছে “মহান আল্লাহ তায়ালা’র নিকট অতি প্রিয় নাম
হচ্ছে আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান।”নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মানিত পিতা সেই
প্রিয় নামেরই অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
(সীরাতুল হালাবিয়া ১/৯)
৩। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল
মুত্তালিব আলাইহিস্ সালাম। তিনি উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ.ছিলেন।(রওদুল উন্ফ ১/২৩)তিনি সেই ব্যক্তি যিনি জাহিলী
যুগেই নিজের জন্য শরাবকে হারাম করেছেন। তিনি ছিলেন মুজতাজাবুদ দাওয়াত, মানে উনার দোয়া কবুল হতো (সূরা ফীলের শানে নুজুল
দেখুন )। কুরাইশদের সহনশীল ধৈর্য্যশীল এবং সর্বাধিক জ্ঞানী ব্যক্তিগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। দানশীলতার জন্য উনাকে
“ফাইয়াজ”উপাধিতে অবহিত করতো মানুষ।” (সীরাতুল হালাবিয়া-
১/৯)
৪। সাইয়্যিদুনা হযরত হাশিম
আলাইহিস্ সালাম।
৫। সাইয়্যিদুনা হযরত আবদে মানাফ আলাইহিস্ সালাম। উনার নাম মুগীরা। তিনি অতি সুন্দর চেহারার অধিকারী
ছিলেন। সেই সৌন্দর্যের কারণে
উনাকে ‘উপত্যকার চাঁদ’উপাধিতে সম্বোধন করা হতো।” (সীরাতুল হালাবিয়া-১/১৩ রওদুল উন্ফ ১/২৫, তারিখতু তাবারী ১/২৩৭)
৬। সাইয়্যিদুনা হযরত কুসাই
আলাইহিস্ সালাম।
৭। সাইয়্যিদুনা হযরত কিলাব আলাইহিস্ সালাম।
৮। সাইয়্যিদুনা হযরত র্মুরা আলাইহিস্ সালাম।
৯। সাইয়্যিদুনা হযরত কাব আলাইহিস্ সালাম।
১০। সাইয়্যিদুনা হযরত লুয়াই আলাইহিস্ সালাম।
১১। সাইয়্যিদুনা হযরত গালিব আলাইহিস্ সালাম।
১২। সাইয়্যিদুনা হযরত ফিহির আলাইহিস্ সালাম।
১৩। সাইয়্যিদুনা হযরত মালিক আলাইহিস্ সালাম।
১৪। সাইয়্যিদুনা হযরত নযর আলাইহিস্ সালাম।
১৫। সাইয়্যিদুনা হযরত কিনানাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
১৬। সাইয়্যিদুনা হযরত খুযাইমাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
১৭। সাইয়্যিদুনা হযরত মাদ্রিকাহ্ আলাইহিস্ সালাম।
উনার নাম মুবারক আমর। এই কারণে উনাকে মাদরিকাহ্
বলা হয় যে, তিনি সেই যুগের সমস্ত সম্মান-ইজ্জত ও গৌরবের অধিকারী ছিলেন। উনার মধ্যে আখিরী রসূল
নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নূর মুবারক এমন উজ্জ¦লভাবে প্রকাশ ঘটেছিল,যা সবাই দেখতে পেতেন।”সুবহানাল্লাহ! (রওদুল
উন্ফ ১/৩০)
১৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইলিয়াস আলাইহিস্ সালাম। তিনি ছিলেন উনার সম্প্রদায়ের সাইয়্যিদ।
হাদীছ শরীফে আছে, “তোমরা হযরত ইলিয়াস
আলাইহিস্ সালামকে গালি দিও না। কারণ,
তিনি ছিলেন প্রকৃত মুমিন। তিনিই উনার পিঠ মুবারক এর মধ্যে আখিরী রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের তালবিয়া (যা হজ্জের মধ্যে পড়া হয়)পাঠ শুনতে পেতেন।” সুবহানাল্লাহ!
(সীরাতুল হালাবিয়া-
১/২৭, রওদুল উন্ফ- ১/৩০)
১৯। সাইয়্যিদুনা হযরত মুদ্বার আলাইহিস্ সালাম। উনার কন্ঠস্বর ছিলো অত্যন্ত সুন্দর। হাদীছ
শরীফে বলা হয়েছে, “তোমরা হযরত মুদ্বার
আলাইহিস সালামকে গালি দিও না, মন্দ বলিও
না। কারণ তিনি হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালামের
পবিত্র দ্বীন/ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।”সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৭ রওদুল উন্ফ ১/৩০)
২০। সাইয়্যিদুনা হযরত নিযার আলাইহিস্ সালাম। তিনি স্বীয় চক্ষু মুবারকের সামনে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লামের নূর দেখতে পেতেন।” সর্বপ্রথম আরবী ভাষায় বিশুদ্ধ কিতাব তিনিই রচনা করেন। (সীরাতুল হালাবিয়া-১/২৮)
২১। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’য়াদ আলাইহিস্ সালাম।
তিনি জিহাদপ্রিয় ছিলেন অর্থাৎ তিনি বড়
মুজাহিদ ছিলেন। এমন কোনো জিহাদ নেই যে, তিনি বিজয়ী হননি। সুবহানাল্লাহ! (সীরাতুল হালাবিয়া- ১/২৮)
২২। সাইয়্যিদুনা হযরত আদ্নান আলাইহিস্ সালাম।
২৩। সাইয়্যিদুনা হযরত আদ্দ আলাইহিস্ সালাম।
২৪। সাইয়্যিদুনা হযরত মা’কুম আলাইহিস্ সালাম।
২৫। সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস্ সালাম।
২৬। সাইয়্যিদুনা হযরত তারিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
২৭। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়ারিব আলাইহিস্ সালাম।
২৮। সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়াশ্যুব আলাইহিস্ সালাম।
২৯। সাইয়্যিদুনা হযরত নাবিত আলাইহিস্ সালাম।
৩০। সাইয়্যিদুনা হযরত ইসমাইল আলাইহিস্ সালাম। তিনি একজন রসূল।
৩১। সাইয়্যিদুনা হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস্ সালাম।
তিনি মুসলিম মিল্লাতের পিতা। মহান আল্লাহ’র রসূল।
৩২। সাইয়্যিদুনা হযরত তারাহ আলাইহিস্ সালাম। যদিও কেউ কেউ হযরত
ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম’র পিতা হিসাবে আযরের নাম উল্লেখ করেছে। নাউযুবিল্লাহ!এটা কুফরী আক্বীদা। কারণ আযর কাফির ছিলো। তাদের এ বক্তব্য সম্পূর্ণ
ভুল ও অশুদ্ধ এবং কাট্টা কুফরী। কারণ ‘সীরাতুল হালাবিয়া’সহ অন্যান্য সীরাত গ্রন্থে উল্লেখ আছে
ﺍﺟﻤﻊ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﻜﺘﺎﺏ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﺍﺯﺭ ﻛﺎﻥ ﻋﻤﻪ
. ﻭﺍﻟﻌﺮﺏ ﺳﻤﻰ ﺍﻟﻌﻢ ﺍﺑﺎ ﻛﻤﺎ ﺗﺴﻤﻰ ﺍﻟﺨﺎﻟﺔ
অর্থাৎ আহলে কিতাবদের ইজমা হয়েছে যে, আযর ছিল হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম উনার চাচা। আরবরা সাধারণত চাচাকে বাবা বলে সম্বোধন করেন। যেমন খালাকে মা বলে
সম্বোধন করতেন।(সীরাতুল হালাবিয়া-১/৪৫)
৩৩। সাইয়্যিদুনা হযরত নাহুর আলাইহিস্ সালাম।
৩৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আরগুবী আলাইহিস্ সালাম।
৩৫। সাইয়্যিদুনা হযরত সারিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
৩৬। সাইয়্যিদুনা হযরত ফালিহ্ আলাইহিস্ সালাম।
৩৭। সাইয়্যিদুনা হযরত আবির আলাইহিস্ সালাম।
৩৮। সাইয়্যিদুনা হযরত শালিখ আলাইহিস্ সালাম।
৩৯। সাইয়্যিদুনা হযরত আরফাখ্শাজ আলাইহিস্ সালাম।
৪০। সাইয়্যিদুনা হযরত শাম আলাইহিস্ সালাম।
৪১। সাইয়্যিদুনা হযরত নূহ আলাইহিস্ সালাম। তিনি মহান আল্লাহ’র রসূল। সুবহানাল্লাহ!
৪২। সাইয়্যিদুনা হযরত লাম্ক আলাইহিস্ সালাম।
৪৩। সাইয়্যিদুনা হযরত মাতুশালাখ আলাইহিস্ সালাম।
৪৪। সাইয়্যিদুনা হযরত আখনুখ আলাইহিস্ সালাম। যিনি হযরত ইদ্রীস আলাইহিস্
সালাম নামে পরিচিত। উনার উপর ৩০খানা ছহীফা
নাযিল হয়েছিল। (তারিখুত তাবারী ১/৫১৮)
৪৫। সাইয়্যিদুনা হযরত ইর্য়াদ আলাইহিস্ সালাম।
৪৬। সাইয়্যিদুনা হযরত মাহ্লাইল আলাইহিস্ সালাম।
৪৭। সাইয়্যিদুনা হযরত কাইনান আলাইহিস্ সালাম।
৪৮। সাইয়্যিদুনা হযরত আনুশ আলাইহিস্ সালাম।
৪৯। সাইয়্যিদুনা হযরত শীস আলাইহিস্ সালাম। তিনিও মহান আল্লাহ’র রসূল ছিলেন। উনার উপর ৫০খানা সহীফা নাযিল হয়েছিল।
৫০। সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম। তিনি সর্বপ্রথম নবী
ও রসূল।
উনার উপর ১০খানা ছহীফা নাযিল হয়েছিল।
(সূত্র: দালায়িলুন্ নবুওওয়াত লিল বাইহাক্বী ১/১৭৯- সীরাতু ইবনে হিশাম- ১/১-২,
সীরাতুল হালাবিয়া-
১/৯, মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া,
তারিখুত্ তাবারী ১/৪৯৭
রাওদুল উন্ফ ১/২৩ শরহুল আল্লামাতিয্ যারকানী ১/৩৫ ইত্যাদি)
No comments:
Post a Comment