শাহেনশাহ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর জীবনী _______
মাইজভাণ্ডার দরবার অসংখ্য পীর, অলি সাধক, ফকির এর সাধন ভজন এর তীর্থ স্থান। পাকিস্থান এর প্রখ্যাত পীর হযরত আল্লামা সৈয়দ
আহম্মদ শাহ সিরিকোট রাঃ কে হযরত কেবলা আহম্মদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডার সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করা হলে তিনি বলেন "তার সম্মন্ধে
জিজ্ঞেস করো না হয়ত কোন বেয়াদবি হয়ে যাবে। পুবঞ্চলে তার মত এত
বড় অলি আর আসেন নাই।" মাইজভাণ্ডার দরবার এ যে কয়জন মহা পুরুষ জন্ম গ্রহন করেছেন তার মধ্যে শাহেনশাহ জিয়াউল
হক মাইজভাণ্ডারী অন্যতম। জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডার তার পিতার নির্দেশে বায়াত গ্রহন করেন
সীতাকুণ্ডের উত্তর সলিমপুর নিবাসি প্রকাশ ফৌজদার হাট এর হযরত মওলানা সফিউর রহমান হাশেমি রাঃ এর
নিকট। তবে তিনি শুধু বায়াত
করান এর পর তাদের মধ্যে আর কোন সম্পর্ক ছিল না।বাকি সব কাজ পিতা দেলওয়ার হসাইন মাইজভাণ্ডার করেন।
কঠোর রিয়াজত সাধনা-
আল্লামা ইকবাল বলেছেন সাহসী মানুষই খাটি মানুষ, যে আল্লাহর মুখমুখি হবার সাহস করে। আল্লাহর মুখমুখি হবার
প্রত্যাশায় কঠোর সাধনা শুরু করেন সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডার। সাধনার এক পর্যায় এ তিনি আহার নিদ্রা একেবারেই
ত্যাগ করেন এবং কিছুদিন আর মধ্যে তিনি সর্ব ভোলা হয়ে যান। মাথায় পানি ধালার পরও শান্ত অবস্থায় ফিরে
আসত না। বড় ছেলের এমন অবস্থায় পিতা বিশেষ ভাবে চিন্তিত হয়ে পরলেন। একবার জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডার বাবাকে প্রশ্ন করেন হযরত কেবলা
কে?বাবা বলেন আল্লাহর
অলি দুই এ মিলে এক। পুত্র আবার প্রশ্ন করেন আপনি কে?বাবা উত্তর দেন আমি হযরত এর অছি ও বাবাজান কেবলার ফয়েজ প্রাপ্ত। বার বার হক ভাণ্ডারী
প্রশ্ন করতে থাকলে হুজরার মধ্যে উত্তেজিত হয়ে বলেন আমাকে এখনও চিন নাই? আমি কে দেখবে?
একটু পরে হুজরার দরজা
খুলে পিতা বের হয়ে আসেন। পিতার মুখমণ্ডল রক্তিম লাল। পুত্র জিয়াউল হক মুখে ভর দিয়ে মুখ নিচু করে বসে
আছে মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। পিতা খাদেম কে নির্দেশ দিল ওকে বাড়িতে নিয়ে যাও। ধরাধরি করে তাকে বিছানায় শোয়ান হল। ছেলের অবস্থা দেখে
মা বাকরুদ্ধ। সেবিকারা পানি ঢালতে
ঢালতে অনেক ক্ষণ পর স্বাভাবিক হয়ে উঠেন। পরদিন হযরত কেবলার মাযার এ সিজদায় লুটিয়ে পড়েন। প্রায় দুই ঘণ্টা মাথা
উঠাবার কোন লক্ষন নাই। বাবা খাদেম দের নির্দেশ দেন উঠিয়ে দোকান এর চেয়ার এ বসিয়ে দাও। চেয়ার এবসালে ঢলে পরতে
দেখে শুইয়ে দেন। সন্তানের এমন অবস্থা
দেখে পিতা কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন - আমাকে বার বার প্রশ্ন করাতে মন একটু গরম হয় যে
শক্তি আমি তার উপর ঢেলেছি তা পার্বত্য চট্রগ্রাম এর পাহাড় এ ঢাললে পাহাড় ঢলে যেত,
সাগরে দিলে সাগর জল
শূন্য মরুভুমি হয়ে যেত। আমার রক্তের বান( উত্তরাধিকার) বলে এখনও টিকে আছে। পর দিন সকাল এ হক ভাণ্ডারী মাকে ডেকে বলেন
মা আমার
সিনা জ্বলে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। পৌষের কনে কনে শীত
এর মদ্ধেও পুকুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বা একটানা কয়েক দিন ডুবে থাকতেন। এক লোক হক ভাণ্ডারী
পাগল কিনা জানতে চাইলে বাবা বলেন -লোকেরা যে রকম মাথা খারাপ মনে করে তেমন নয় আমার বড়
মিয়া আল্লাহর পাগল। সাধনা বলে যেখানে উঠেছে
তার উপরে ইনসানিঅতের কোন স্থান নাই। ১৯৫৪ সাল থেকে ওফাত পর্যন্ত তিনি কখনও একটানা রাতে ঘুমিয়ে কাটান
নাই। সকালের দিকে বিশ্রাম
নিতেন। জিয়াউল হক মাইজ ভাণ্ডারী
এক সাথে অনেক অনেক টাকা পুড়ে ফেলতেন তিনি বলতেন সব টাকা ভাল না তাই পুরতে হয়। সাধনার চূড়ান্ত পর্যায়
শেষে প্রায় বলতেন আমার তরিকা দুই পয়সার নয় কোটি কোটি গুণ বড়।
কারামত
১৯৭৫ সাল ১৪ অক্টোবর ২৭ আশ্বিন বাবা ভাণ্ডারীর
জন্মদিন। রাত থেকে বৃষ্টি। আকাশ কাল মেঘে ঢাকা । সকাল এ হক ভাণ্ডারী গেট এ আসেন ও জানতে চান ডেকোরেশন হয় নি কেন?
রঙ্গিন বাল্ব লাগিয়ে
সাজিয়ে দাও। লোকটি বলল বৃষ্টি হচ্ছে তাই কাজ হয় নি। সাথে সাথে অত্তাধিক জজবা হালতে বললেন কিসের বৃষ্টি ?
আমাকে চিন?হক ভাণ্ডারী চলে গেল
হুজরায় ততক্ষণ এ মেঘ কেটে যাচ্ছে আকাশ আগের চেয়ে ফর্সা। অল্পক্ষণ এর মধ্যে আকাশ পরিস্কার হয়ে রোদ
উঠলো।
একদিন রাত ৩ টায় চলে গেল ফৌজদার হাট সমুদ্র
সৈকত চলে গেল এত রাতে কেন যাবে জানতে চাইলে তিনি সফর সঙ্গি কে বলেন সমুদ্রের ধেউ এ
পানির কলকল ঝুপঝাপ ধনিতে লা ইলাহা ইল্লালাহ জিকির উঠে আমরা খোয়াজ খিজির এর জিকির শুনবো। ঠাণ্ডা বাতাস ও বৃষ্টি
পড়ছে তখন। সমুদ্রে পৌঁছে তিনি চলে যেতে লাগলেন গভীর সমুদ্রের দিকে যেতে যেতে এক সময় দৃষ্টি
সীমার বাইরে চলে গেল ঘণ্টা খানেক পর তিনি ফিরে এলেন। তাহার সফর সঙ্গি দেখল তাহার পরনের কাপড় ভিজা
নয় সম্পূর্ণ শুকনা।
১৯৮১ সালের ২৩ মার্চ চট্রগ্রাম এর চৈতন্য
গলির এক বাসায় জজবা হালতে বললেন "প্রেসিডেন্ট রিগান এর পেট আমি ফেটে ফেলব,
সে কি আমাকে চিনে?"
এর কিছুদিন পর ৩০ মার্চ
জন হিংকেল নামক এক যুবক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কে গুলি ছুড়ে ওই গুলিতে
তিনি পেটে আঘাত পান। হাসপাতালে পেট অপারেশন
করে গুলি বের করা হয়। হক ভাণ্ডারীর কথা মত
পেট ফুটেছে মারা যান নাই। এছাড়া ও মানুষের পেটে হাত বুলিয়ে অপারেশন বাদ, পিটিয়ে একশিরা রোগ
শেষ, বোবার মুখে বাক্য দান,
তেল ছাড়া গাড়ি চালানো,
সহ আরও অনেক অনেক কারামত
রয়েছে। যা এই সংক্ষিপ্ত পরিসরে
বর্ণনা করা সম্ভব না।
অমর বানী
>জিয়াউল হক মাইজ ভাণ্ডারী আক্ষেপ করে বলেন- লোকেরা আমার কাছে আসে সন্তান হয় না,
চাকুরীতে প্রমোশন,ব্যবসা, চিকিৎসা এসব নিয়ে। আল্লাহ্ তলবিতে কেও
আসে না।
>এই দরবার এ ভক্তি বিশ্বাস এ যারা আসে সবায় মুরিদ।>আমার তরিকা ২ পয়সার নয় কোটি কোটি গুণ বড়।
>রহমাতুল্লিল আলামিন রাসুলের রহমতের সীমা জুড়ে আমার বেলায়েতি কর্মক্ষমতা।
> আমার দরবার আন্তর্জাতিক প্রসাসন অফিস। যেখান থেকে বিশ্ব পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত।
>এই বিশ্বে কখন কি হয়েছে, হচ্ছে,হবে সব আমার জানা।
>আরশের উপর বসে আমি সৃষ্টির কাজ কর্ম দেখি, উপরের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর সাথে কথা বলি।
>মাইজ ভাণ্ডার সরিফ-হায়াতের ভাণ্ডার, রিজিকের ভাণ্ডার, দৌলতের ভাণ্ডার, ইজ্জতের ভাণ্ডার,
>আল্লাহর অলিরা মানুষের রুহানি পিতা তাই বাবা
ডাকা উচিত। নতুবা ফয়েজ রহ্মত পাওয়া যায় না।
>হজের টাকায় দুস্থ মানুষের সেবা হজে আকবর। পরলোক গমন এই মহান অলি ১৯৮৮ সালের ১২ অক্টোবর রাত ১২ তা ২৭ মিনিট
এ তিনি আল্লাহ্র সাথে চিরস্থায়ী মিলন
এ ধন্য হন। ৫ লক্ষ মানুষ তার জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।
যোগ্য উত্তরসুরি
জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর যোগ্য উত্তরসুরি
হিসেবে তাহার একমাত্র পুত্র হজরত সৈয়দ মুহাম্মাদ হাসান মাইজভাণ্ডারী ও তাহার চাচাত
ভাই সৈয়দ বদিউজ্জামান মাইজ ভাণ্ডারীর নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।
No comments:
Post a Comment