Saturday, June 25, 2016

" নাহজুল বালাগা "

ইমাম আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)
খোৎবাঃ ৫১
সিফফিনে যখন মুয়াবিয়ার লোকেরা আমিরুল মোমেনিনের লোকদের পরাভূত করে ইউফ্রেটিস নদীর তীর দখল করে নেয় এবং তাদের পানি বন্ধ করে দেয় তখন আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
তারা[1] তোমাদের সাথে যুদ্ধ করতে চায়। সুতরাং তোমরা কলঙ্কময় ও হীন অবস্থায় থাকো, না হয় তোমাদের তরবারিকে রক্ত পান করাও এবং পানি দিয়ে তোমাদের তৃষ্ণা নিবারন কর। অতএব এ অবস্থায় তোমরা চুপ থাকাই তোমাদের প্রকৃত মৃত্যু এবং বিজয় লাভ করার মধ্যেই তোমাদের প্রকৃত বেচে থাকা। সাবধান! মুয়াবিয়া বিদ্রোহীদের একটা ছোট দলের নেতুত্ব দিচ্ছে এবং সত্য ঘটনা থেকে কৌশলে তাদেরকে অন্ধকারে রেখেছে। ফলে তারা তাদের বক্ষকে মৃত্যুর লক্ষ্যস্থলে পরিণত করেছে।
و من خطبة له (عليهالسلام) لما غلب أصحاب معاوية أصحابه (عليهالسلام) على شريعة الفرات بصفين و منعوهم الماء
قَدِ اسْتَطْعَمُوكُمُ الْقِتَالَ فَأَقِرُّوا عَلَى مَذَلَّةٍ وَ تَأْخِيرِ مَحَلَّةٍ أَوْ رَوُّوا السُّيُوفَ مِنَ الدِّمَاءِ تَرْوَوْا مِنَ الْمَاءِ فَالْمَوْتُ فِي حَيَاتِكُمْ مَقْهُورِينَ وَ الْحَيَاةُ فِي مَوْتِكُمْ قَاهِرِينَ أَلَا وَ إِنَّ مُعَاوِيَةَ قَادَ لُمَةً مِنَ الْغُوَاةِ وَ عَمَّسَ عَلَيْهِمُ الْخَبَرَ حَتَّى جَعَلُوا نُحُورَهُمْ أَغْرَاضَ الْمَنِيَّةِ.
টিকাঃ- [1] = [1]।আমিরুল মোমেনিন সিফফিনে পৌছার আগেই মুয়াবিয়া নদীর তীরে চল্লিশ হাজার লোক মোতায়েন করলো যেন সিরিয়াবাসী ছাড়া আর কেউ পানি নিতে পারে না। আমিরুল মোমেনিনের বাহিনী যখন সেখানে পৌছলো তখন তারা দেখতে পেল অবরুদ্ধ স্থানটি ছাড়া পানি পাওয়ার আর কোন পথ নেই। অন্য একটা স্থান তারা বের করেছিল কিন্তু অনেক উচু টিলা অতিক্রম করে সেখানে যাওয়া বড়ই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমিরুল মোমেনিন সা’সা’আহ্ ইবনে সুহান আল-আবদিকে মুয়াবিয়ার কাছে প্রেরণ করে অনুরোধ জানালেন যে, সে যেন পানির ওপর থেকে এ নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়। কিন্তু মুয়াবিয়া আমিরুল মোমেনিনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলো। এতে আমিরুল মোমেনিনের বাহিনী তৃষ্ণা কাতর হয়ে পড়লো। আমিরুল মোমেনিন এ অবস্থা দেখে বললেন, “উঠ এবং তরবারির সাহায্যে পানি সংগ্রহ কর।” ফলে এসব তৃষ্ণার্ত লোক অসি কোষমুক্ত করলো-ধনুকে শর যোজনা করলো এবং মুয়াবিয়ার লোকদেরকে ছত্রভঙ্গ করে সোজা নদীতে চলে গেল এবং শত্রুকে বিতারিত করে পানি সংগ্রহের স্থান দখল করে নিল।
এসময় আমিরুল মোমেনিনের লোকেরা ইচ্ছা প্রকাশ করলো যে, তারাও মুয়াবিয়ার লোকলদর জন্য পানি বন্ধ করে দিয়ে তাদেরকে উচিত শিক্ষা দেবে যাতে করে সিরিয়রা তৃষ্ণায় মারা যায়। আমিরুল মোমেনিন বললেন, “তোমরা কি একই নিষ্ঠুর পদক্ষেপ নিতে চাও যা সিরিয়রা করেছে? কখনো কারো পানি বন্ধ করো না। যে কেউ পানি পান করতে চায়-করুক, যে কেউ নিয়ে যেতে চায়-নিয়ে যাক।” ফলত হযরত আলীল বাহিনী নদীর তীর দখল করা সত্ত্বেও কাউকে পানি গ্রহণে বাধা দেয়া হয় নি এবং পানি গ্রহণে সকলের পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল।
খোৎবা- ৫২
পরকালের পুরষ্কার ও শান্তি সম্পর্কে
সাবধান, দুনিয়া নিজেকে গুটিয়ে আনছে এবং প্রস্থান ঘোষণা করছে। এর পরিচিতি বস্তুনিচয় অপরিচিত হয়ে গেছে এবং এটা দ্রুতবেগে পশ্চাতে সরে যাচ্ছে। দুনিয়া তার অধিবাসীদের ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং এর প্রতিবেশিদের মৃত্যুর দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর মধুর জিনিসগুলোকে (ভোগ-বিলাস) তিক্ত করে দিয়েছে এবং স্বচ্ছ জিনিসগুলো মলিন হয়ে গেছে। ফলে যা অবশিষ্ট রয়েছে তা পত্রের গায়ে লেগে থাকা পানির মতো অথবা পরিমাণে এক কুলি পানি। যদি তৃষ্ণার্ত ব্যাক্তি এটুকু পান করে তবে তার তৃষ্ণা নিবারণ হয় না।
হে আল্লাহর বান্দাগণ, এ দুনিয়া পরিত্যাগের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও, কারণ দুনিয়াবাসীদের ধ্বংস অবধারিত। সাবধান, মনের কামনা-বাসনা ও লালসা যেন তোমাদেরকে বশীভূত না করে এবং তোমরা মনে করো না যে এখানে তোমরা চিরস্থায়ী হয়ে থাকরে।
আল্লাহর কসম, যদি তোমরা শাবকহারা উষ্ট্রির মেতো কাদোঁ, কবুতরের মতো কুজন করো, অনুরক্ত নির্জনবাসীর (দরবেশ) মতো আওয়াজ করো এবং আল্লাহর নৈকট্য ও বাকা প্রাপ্তির জন্য তোমাদের সন্তান-সন্ততি ও সম্পদ পরিত্যাগ করে আল্লাহর দিকে মুখ ফেরাও তবুও তাঁর পুরস্কারের তুলনায় তা কিছুই নয়, যা আমি তোমাদের জন্য প্রত্যাশা করি। অথবা তাঁর শান্তির তুলনায় কিছুই নয়, যা আমি তোমাদের জন্য আশঙ্কা করি।
আল্লাহর কসম, যদি তোমাদের হৃদয় সম্পূর্ণরুপেবিগলিত হতো, তাঁকে পাবার আশায় অথবা তাঁর ভয়ে তোমাদের চোখ দিয়ে রক্তাশ্রু বের হতো এবং যদি পৃখিবী বিলীন হওয়া পর্যন্ত তোমাদেরকে বেচে থাকতে দেয়া হতো তবুও তোমাদের আমল তাঁর রহমতের এক কণার সমতুল্য হবে না এবং তোমাদেরকে ইমানের পথে পরিচালনার প্রতিদান হবে না।
و من خطبة له (عليهالسلام) و هي في التزهيد في الدنيا و ثواب الله للزاهد و نعم الله على الخالق
التزهيد في الدنيا
أَلَا وَ إِنَّ الدُّنْيَا قَدْ تَصَرَّمَتْ وَ آذَنَتْ بِانْقِضَاءٍ وَ تَنَكَّرَ مَعْرُوفُهَا وَ أَدْبَرَتْ حَذَّاءَ فَهِيَ تَحْفِزُ بِالْفَنَاءِ سُكَّانَهَا وَ تَحْدُو بِالْمَوْتِ جِيرَانَهَا وَ قَدْ أَمَرَّ فِيهَا مَا كَانَ حُلْواً وَ كَدِرَ مِنْهَا مَا كَانَ صَفْواً فَلَمْ يَبْقَ مِنْهَا إِلَّا سَمَلَةٌ كَسَمَلَةِ الْإِدَاوَةِ أَوْ جُرْعَةٌ كَجُرْعَةِ الْمَقْلَةِ لَوْ تَمَزَّزَهَا الصَّدْيَانُ لَمْ يَنْقَعْ.
فَأَزْمِعُوا عِبَادَ اللَّهِ الرَّحِيلَ عَنْ هَذِهِ الدَّارِ الْمَقْدُورِ عَلَى أَهْلِهَا الزَّوَالُ وَ لَا يَغْلِبَنَّكُمْ فِيهَا الْأَمَلُ
وَ لَا يَطُولَنَّ عَلَيْكُمْ فِيهَا الْأَمَدُ.
ثواب الزهاد
فَوَاللَّهِ لَوْ حَنَنْتُمْ حَنِينَ الْوُلَّهِ الْعِجَالِ وَ دَعَوْتُمْ بِهَدِيلِ الْحَمَامِ وَ جَأَرْتُمْ جُؤَارَ مُتَبَتِّلِي الرُّهْبَانِ
وَ خَرَجْتُمْ إِلَى اللَّهِ مِنَ الْأَمْوَالِ وَ الْأَوْلَادِ الْتِمَاسَ الْقُرْبَةِ إِلَيْهِ فِي ارْتِفَاعِ دَرَجَةٍ عِنْدَهُ أَوْ غُفْرَانِ سَيِّئَةٍ أَحْصَتْهَا كُتُبُهُ وَ حَفِظَتْهَا رُسُلُهُ لَكَانَ قَلِيلًا فِيمَا أَرْجُو لَكُمْ مِنْ ثَوَابِهِ وَ أَخَافُ عَلَيْكُمْ مِنْ عِقَابِهِ.
نعم الله
وَ تَاللَّهِ لَوِ انْمَاثَتْ قُلُوبُكُمُ انْمِيَاثاً وَ سَالَتْ عُيُونُكُمْ مِنْ رَغْبَةٍ إِلَيْهِ أَوْ رَهْبَةٍ مِنْهُ دَماً ثُمَّ عُمِّرْتُمْ فِي الدُّنْيَا مَا الدُّنْيَا بَاقِيَةٌ مَا جَزَتْ أَعْمَالُكُمْ عَنْكُمْ وَ لَوْ لَمْ تُبْقُوا شَيْئاً مِنْ جُهْدِكُمْ أَنْعُمَهُ عَلَيْكُمُ الْعِظَامَ وَ هُدَاهُ إِيَّاكُمْ لِلْإِيمَانِ.
খোৎবা-৫৪
বায়াতের অঙ্গীকার সম্পর্কে
তারা এত প্রচণ্ড বেগে আমার দিকে ধাবিত হয়েছিল যে, মনে হলো যেন তৃষ্ণার্ত উটের পাল ছাড়া পেয়ে একে অপরের ওপর পড়ে পানীয় পানির দিকে ধাবিক হচ্ছে। আমার মনে হয়েছিল-হয় ওরা আমাকে হত্যা করবে, না হয় একে অপরকে আমার সামনে হত্যা করবে। আমি ব্যাপারটি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে এত বেশি চিন্তা করেছিলাম যে, আমার ঘুমের ব্যাঘাত হয়েছিল। কিন্তু হয় তাদের সাথে যুদ্ধ, না হয় মুহাম্মদ (সাঃ) যা এনেছিলেন তা পরিত্যাগ করা ছাড়া আর কোন পথ দেখতে পেলাম না। আমি বিবেচনা করে দেখলাম যে, আল্লাহর শান্তি অপেক্ষা যুদ্ধ করা আমার জন্য সহজ এবং াুহকালের দুঃখ-কষ্ট পরকালের দুঃখ-কষ্ট ।অপেক্ষা সহজ।
فَتَدَاكُّوا عَلَيَّ تَدَاكَّ الْإِبِلِ الْهِيمِ يَوْمَ وِرْدِهَا وَ قَدْ أَرْسَلَهَا رَاعِيهَا وَ خُلِعَتْ مَثَانِيهَا حَتَّى ظَنَنْتُ أَنَّهُمْ قَاتِلِيَّ أَوْ بَعْضُهُمْ قَاتِلُ بَعْضٍ لَدَيَّ وَ قَدْ قَلَّبْتُ هَذَا الْأَمْرَ بَطْنَهُ وَ ظَهْرَهُ حَتَّى مَنَعَنِي النَّوْمَ فَمَا وَجَدْتُنِي يَسَعُنِي إِلَّا قِتَالُهُمْ أَوِ الْجُحُودُ بِمَا جَاءَ بِهِ مُحَمَّدٌ (صلىاللهعليهوسلم) فَكَانَتْ مُعَالَجَةُ الْقِتَالِ أَهْوَنَ عَلَيَّ مِنْ مُعَالَجَةِ الْعِقَابِ وَ مَوْتَاتُ الدُّنْيَا أَهْوَنَ عَلَيَّ مِنْ مَوْتَاتِ الْآخِرَةِ

খোৎবা- ৫৫
সিফফিনে যুদ্ধ আরম্ভ করার অনুমতি দিতে আমিরুল মোমেনিন বিলম্ব করায় ‍তার লোকজন অধৈর্য হয়ে পড়লে তিনি বলেনঃ
বেশ, যদি তোমরা মনে কর এ বিলন্ব এজন্য যে, আমি মৃত্যুবরণ করতে অনিচ্ছুক, তবে আল্লাহর কসম, আমি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই কিংবা মৃত্যু আমার দিকে তেড়ে আসছে এ বিষয়টি আমি থোড়াই পরোয়া করি। যদি তোমরা ধারণা কর যে, বিলন্বের কারণ সিরিয়দের সম্পর্কে আমার সংশয়, তবে আল্লাহর কসম, জেনে রাখো, আমি এ কারণে বিলন্ব করেছিলাম, যদি আরো কোন দল আমার সাথে যোগদান করে, যদি আমার মাধ্যমে ওরা পথের দিশা পায় এবং যদি তাদের দূর্বল চোখে আমার আলো দেখতে পায়। বিভ্রান্তিতে নিপতিত অবস্থায় হত্যা করা থেকে আলোর পথে আসার সুযোগ দেয়া আমার কাছে অধিক প্রিয়। এরপর ওরা ওদের নিজেদের পাপের ভার বহন করতে থাকবে।
و من كلام له (عليهالسلام) و قد استبطأ أصحابه إذنه لهم في القتال بصفين
أَمَّا قَوْلُكُمْ أَ كُلَّ ذَلِكَ كَرَاهِيَةَ الْمَوْتِ فَوَاللَّهِ مَا أُبَالِي دَخَلْتُ إِلَى الْمَوْتِ أَوْ خَرَجَ الْمَوْتُ إِلَيَّ وَ أَمَّا قَوْلُكُمْ شَكّاً فِي أَهْلِ الشَّامِ فَوَاللَّهِ مَا دَفَعْتُ الْحَرْبَ يَوْماً إِلَّا وَ أَنَا أَطْمَعُ أَنْ تَلْحَقَ بِي طَائِفَةٌ فَتَهْتَدِيَ بِي وَ تَعْشُوَ إِلَى ضَوْئِي وَ ذَلِكَ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَقْتُلَهَا عَلَى ضَلَالِهَا وَ إِنْ كَانَتْ تَبُوءُ بِآثَامِهَا.
খোৎবা- ৫৬
যুদ্ধ ক্ষেত্রে অটলতা সম্পর্কে
আল্লাহর রাসূলের (সাঃ) সাথে থাকাকালে আমরা আমাদের পিতা-মাতা, পুত্র, ভ্রাতা ও চাচাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতাম এবং এ দৃঢ়তা বহাল ছিল আমাদের ইমানে, আনুগত্য, সত্য পথ অনুসরণে, দুঃখ-যন্ত্রনা সহ্য করাতে এবং শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে। আমাদের পক্ষ থেকে একজন এবং শত্রু পক্ষ থেকে একজন একে অপরের ওপর ষাঁড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়তো-লক্ষ্য শুধু কে কাকে হত্যা করতে পারে। কখনো আমাদের লোক প্রতিপক্ষকে আবার কখনো শত্রু আমাদের লোককে অতিক্রম করতো।
আল্লাহ যখন আমাদের সততা ও সত্যের প্রতি অটলতা দেখলেন তখন তিনি আমাদের প্রতি তার সাহায্য প্রেরণ করে আমাদের শত্রুকে পরাজয়ের কলঙ্কে কলঙ্কিত করেছিলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল, যেমন করে উট মাটিতে ঘাড় এলিয়ে দিয়ে বিশ্রাম গ্রহণ করে। আমার জীবনের কসম, আমরা যদি তোমাদের মতো আচরণ করতাম তবে দ্বিনের স্তম্ভ দাঁড় করানো যেত না এবং ইমানের বৃক্ষেও পাতা গজাতো না। আল্লাহর কসম, তোমরা এখন দুধের পরিবর্তে আমাদের রক্ত দোহন করবে এবং পরিণামে তোমরা লজ্জিত হবে ।
56- و من كلام له (عليهالسلام) يصف أصحاب رسول الله و ذلك يوم صفين حين أمر الناس بالصلح
وَ لَقَدْ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ (صلىاللهعليهوآله) نَقْتُلُ آبَاءَنَا وَ أَبْنَاءَنَا وَ إِخْوَانَنَا وَ أَعْمَامَنَا مَا يَزِيدُنَا ذَلِكَ إِلَّا إِيمَاناً وَ تَسْلِيماً وَ مُضِيّاً عَلَىاللَّقَمِ وَ صَبْراً عَلَى مَضَضِ الْأَلَمِ وَ جِدّاً فِي جِهَادِ الْعَدُوِّ وَ لَقَدْ كَانَ الرَّجُلُ مِنَّا وَ الْآخَرُ مِنْ عَدُوِّنَا يَتَصَاوَلَانِ تَصَاوُلَ الْفَحْلَيْنِ يَتَخَالَسَانِ أَنْفُسَهُمَا أَيُّهُمَا يَسْقِي صَاحِبَهُ كَأْسَ الْمَنُونِ فَمَرَّةً لَنَا مِنْ عَدُوِّنَا وَ مَرَّةً لِعَدُوِّنَا مِنَّا فَلَمَّا رَأَى اللَّهُ صِدْقَنَا أَنْزَلَ بِعَدُوِّنَا الْكَبْتَ وَ أَنْزَلَ عَلَيْنَا النَّصْرَ حَتَّى اسْتَقَرَّ الْإِسْلَامُ مُلْقِياً جِرَانَهُ وَ مُتَبَوِّئاً أَوْطَانَهُ وَ لَعَمْرِي لَوْ كُنَّا نَأْتِي مَا أَتَيْتُمْ مَا قَامَ لِلدِّينِ عَمُودٌ وَ لَا اخْضَرَّ لِلْإِيمَانِ عُودٌ وَ ايْمُ اللَّهِ لَتَحْتَلِبُنَّهَا دَماً وَ لَتُتْبِعُنَّهَا نَدَماً.
খোৎবা-৫৭
মুয়াবিয়ার সম্পর্কে আমিরুল মোমেনিন আলী আ. তাঁর অনুচরদের বলেছিলেনঃ
আমার অব্যবহিত পরেই এমন এক লোক তোমাদের ওপর আপতিত হবে যার মুখ-গহবর প্রশন্ত এবং পেট বিশালাকার। সে যা পাবে তা-ই গলাধঃকরণ করবে এবং যা পাবে না তার জন্য উদগ্র বাসনা পোষণ করবে। তাকে হত্যা করা তোমাদের উচিত হবে কিন্তু আমি জানি, তাকে তোমরা হত্যা করবে না। আমাকে গালিগালাজ করতে এবং আমার আদর্শ পরিত্যাগ করতে সে তোমাদের আদেশ দেবে। গালিগালাজ সন্বন্ধে, আমি বলবো, তোমরা আমাকে গালিগালাজ করো, কারণ তা আমার জন্য হবে মর্যাদাকর আর তোমাদের জন্য হবে তার অত্যাচার থেকে মুক্তির পথ। আমার আদর্শ ত্যাগ বিষয়ে বলছি, আমার আদর্শ ত্যাগ করা তোমাদের উচিৎ হবে না,কারণ আমি ইসলামের ফিতরাতে জন্ম গ্রহণ করেছি এবং ইসলাম গ্রহণ ও হিজরতে সর্বাগ্রণী ছিলাম।
و من كلام له (عليهالسلام) في صفة رجل مذموم ثم في فضله هو (عليهالسلام )
أَمَّا إِنَّهُ سَيَظْهَرُ عَلَيْكُمْ بَعْدِي رَجُلٌ رَحْبُ الْبُلْعُومِ مُنْدَحِقُ الْبَطْنِ يَأْكُلُ مَا يَجِدُ وَ يَطْلُبُ مَا لَا يَجِدُ فَاقْتُلُوهُ وَ لَنْ تَقْتُلُوهُ أَلَا وَ إِنَّهُ سَيَأْمُرُكُمْ بِسَبِّي وَ الْبَرَاءَةِ مِنِّي فَأَمَّا السَّبُّ َسُبُّونِي فَإِنَّهُ لِي زَكَاةٌ وَ لَكُمْ نَجَاةٌ وَ أَمَّا الْبَرَاءَةُ فَلَا تَتَبَرَّءُوا مِنِّي فَإِنِّي وُلِدْتُ عَلَى الْفِطْرَةِ وَ سَبَقْتُ إِلَى الْإِيمَانِ وَ الْهِجْرَةِ
খোৎবা-৫৮
খারিজিদের উদ্দেশ্যে আমিরুল মোমেনিন বলেনঃ
ঝড় তোমাদের অতর্কিতে অভিভূত করতে পারে যখন তোমাদের খোঁজা দেয়ার (সংষ্কারের জন্য) মতো কেউ থাকবে না। ইমানে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এবং রাসূলের সাথী হয়ে যুদ্ধ করেও কি আমি আমার ধর্মত্যাগের সাক্ষী হব? “সে ক্ষেত্রে আমি বিপথগামী হব এবং সৎপথ প্রাপ্তদিগের অন্তভূক্ত থাকব না” (কোরআন, ৬:৫৬)। সুতরাং তোমরা তোমাদের পাপের স্থানসমুহে ফিরে যেতে পার এবং তোমাদের পদাঙ্কও তোমরা ফিরে পাবে। সাবধান, নিশ্চয়ই আমার পরে তোমরা নিদারুন অসম্মান ও ধারালো তরবারিতে বিপর্যন্ত হবে এবং অত্যাচারী কর্তৃক গৃহীত হাদিস তোমাদের প্রতি সুন্নত হিসাবে পরিগণিত হবে ।
و من كلام له (عليهالسلام) كلم به الخوارج حين اعتزلوا الحكومة و تنادوا أن لا حكم إلا لله
أَصَابَكُمْ حَاصِبٌ وَ لَا بَقِيَ مِنْكُمْ آثِرٌ أَ بَعْدَ إِيمَانِي بِاللَّهِ وَ جِهَادِي مَعَ رَسُولِ اللَّهِ (صلىاللهعليه) أَشْهَدُ عَلَى نَفْسِي بِالْكُفْرِ لَقَدْ ضَلَلْتُ إِذاً وَ ما أَنَا مِنَ الْمُهْتَدِينَ فَأُوبُوا شَرَّ مَآبٍ وَ ارْجِعُوا عَلَى أَثَرِ الْأَعْقَابِ أَمَا إِنَّكُمْ سَتَلْقَوْنَ بَعْدِي ذُلًّا شَامِلًا وَ سَيْفاً قَاطِعاً وَ أَثَرَةً يَتَّخِذُهَا الظَّالِمُونَ فِيكُمْ سُنَّةً.
قال الشريف قوله (عليهالسلام) و لا بقي منكم آبر يروى على ثلاثة أوجه أحدها أن يكون كما ذكرناه آبر بالراء من قولهم للذي يأبر النخل أي يصلحه. و يروى آثر و هو الذي يأثر الحديث و يرويه أي يحكيه و هو أصح الوجوه عندي كأنه (عليهالسلام) قال لا بقي منكم مخبر. و يروى آبز بالزاي المعجمة و هو الواثب و الهالك أيضا يقال له آبز.
খোৎবা-৫৯
আমিরুল মোমেনিন যখন খারিজিদের সাথে যুদ্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তখন তাকে অবহিত করা হলো যে, খারিজিরা নাহরাওয়ান সেতু পার হয়ে ওপারে চলে গেছে। তখন তিনি বললেনঃ
নদীর ওপার তাদের পতন স্থল। আল্লাহর কসম, তাদের দশ জনও বাচঁতে পারবে না, অপরদিকে তোমাদের দশ জনও শহীদ হবে না ।
59- و قال (عليهالسلام) لما عزم على حرب الخوارج و قيل له إن القوم عبروا جسر النهروان
مَصَارِعُهُمْ دُونَ النُّطْفَةِ وَ اللَّهِ لَا يُفْلِتُ مِنْهُمْ عَشَرَةٌ وَ لَا يَهْلِكُ مِنْكُمْ عَشَرَةٌ قال الشريف يعني بالنطفة ماء النهر.
و هي أفصح كناية عن الماء و إن كان كثيرا جما
و قد أشرنا إلى ذلك فيما تقدم عند مضي ما أشبهه
খোৎবা-৬০
যখন আমিরুল মোমেনিনকে জানানো হলো যে, খারিজিরা সকলেই নিহত হয়েছে, তিনি বললেনঃ
আল্লাহর কসম, তারা এখনো সম্পূর্ণ শেষ হয় নি। তারা এখনো পুরুষের ঔরসে ও নারীর গর্ভাশয়ে রয়েছে। যখনই তাদের মধ্য থেকে কোন নেতা গজিয়ে উঠবে তখনই তাকে কেটে ফেলা হবে, যে পর্যন্ত না তাদের শেষ জন চোর ও ডাকাত হয়ে যায় ।
60- و قال (عليهالسلام) لما قتل الخوارج فقيل له يا أمير المؤمنين هلك القوم بأجمعهم
كَلَّا وَ اللَّهِ إِنَّهُمْ نُطَفٌ فِي أَصْلَابِ الرِّجَالِ وَ قَرَارَاتِ النِّسَاءِ كُلَّمَا نَجَمَ مِنْهُمْ قَرْنٌ قُطِعَ حَتَّى يَكُونَ آخِرُهُمْ لُصُوصاً سَلَّابِينَ.

No comments:

Post a Comment