হযরত ইমাম হাসান মুজতাবা (আ.) ছিলেন দ্বিতীয় ইমাম। তিনি আমিরুল মু’মিনীন হযরত ইমাম আলী (আ.) এবং নবীকন্যা হযরত ফাতিমা (আ.)-এর প্রথম সন্তান এবং তৃতীয় ইমাম হযরত হুসাই...ন (আ.) এর ভাই।
মহানবী (সা.) অসংখ্যবার বলেছেনঃ “হাসান ও হুসাইন আমারই সন্তান”।
এমনকি হযরত ইমাম আলী (আ.) তাঁর সকল সন্তানদের প্রতি লক্ষ্য করে একই কথার পুনারুক্তি করেছিলেন। তিনি বলেছেনঃ “তোমরা আমার সন্তান এবং হাসান ও হুসাইন আল্লাহ্র নবীর সন্তান”।
হযরত ইমাম হাসান (আ.) হিজরী ৩য় সনে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রায় সাত বছরেরও কিছু বেশী সময় মহানবী (সা.)-এর সাহচর্য লাভ করতে সক্ষম হন। তিনি বিশ্ব নবী (সা.)-এর ওফাতের প্রায় তিন বা ছয় মাস পর যখন নবীকন্যা হযরত ফাতিমা (আ.) পরলোক গমন করেন, তখন তিনি তাঁর মহান পিতা হযরত আলী (আ.)-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হতে থাকেন। পিতার শাহাদতের পর মহান আল্লাহ্র নির্দেশে এবং পিতার ‘ওসিয়াত’ অনুযায়ী তিনি ইমামতের পদে আসীন হন। অতঃপর তিনি প্রকাশ্য খেলাফতের পদাধিকারীও হন। প্রায় ৬মাস যাবৎ তিনি খলিফা হিসেবে মুসলমানদের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু মুয়াবিয়া ছিলেন নবীবংশের চরম ও চিরশত্রু। ইসলামী রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় খেলাফতের মসনদ অধিকারের লোভে ইতিপূর্বে বহু যুদ্ধের সুত্রপাত সে ঘটিয়ে ছিল তখন ইরাক ছিল হযরত ইমাম হাসান (আ.)-এর খেলাফতের রাজধানী। মুয়াবিয়া হযরত ইমাম হাসান (আ.)-কে কেন্দ্রীয় খেলাফতের পদ থেকে অপসারণের লক্ষ্যে ইরাক সীমান্তে সেনাবাহিনী প্রেরণ করে। একইসাথে বিপুল পরিমাণ অর্থের ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে গোপনে ইমাম হাসান (আ.)-এর সেনাবাহিনীর বহু অফিসারকে ক্রয় করে। এমনকি ঘুষ ছাড়াও অসংখ্য প্রতারণামূলক লোভনীয় প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে মুয়াবিয়া, ইমাম হাসান (আ.)-এর সেনাবাহিনীকে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘটাতে সক্ষম হয়। যার পরিণামে হযরত ইমাম হাসান (আ.) মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হন। উক্ত চুক্তি অনুসারে হযরত ইমাম হাসান (আ.) প্রকাশ্য খেলাফতের পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
চুক্তির শর্ত অনুসারে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পরপরই হযরত ইমাম হাসান (আ.) পুনরায় খলিফা হবেন এবং খেলাফতের পদ নবীবংশের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। আর এই অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ে মুয়াবিয়া রাসুল বংশের অনুসারীদের যে কোন প্রকারের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন থেকে বিরত থাকবে। আর এভাবেই মুয়াবিয়া কেন্দ্রীয় খেলাফতের পদ দখল করতে সর্মথ হয় এবং ইরাকে প্রবেশ করে। কিন্তু ইরাকে প্রবেশ করে সে এক জনসভার আয়োজন করে। ঐ জনসভায় প্রকাশ্যভাবে জনসমক্ষে সে ইমাম হাসান (আ.)-এর সাথে ইতিপূর্বে সম্পাদিত চুক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করে।
আর তখন থেকেই সে পবিত্র আহলে বাইত (নবীবংশ) ও তাঁদের অনুসারীদের উপর সর্বাত্মক অত্যাচার ও নিপীড়ন চালাতে শুরু করে। হযরত ইমাম হাসান (আ.) তাঁর দীর্ঘ দশ বছর সময়কালীন ইমামতের যুগে শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সৃষ্ট প্রচন্ডচাপের মুখে এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিবেশে জীবন যাপন করতে বাধ্য হন। এমনকি নিজের ঘরের মধ্যকার নিরাপত্তাও তিনি হারাতে বাধ্য হন। অবশেষে হিজরী ৫০সনে মুয়াবিয়ার ষড়যন্ত্রে ইমাম হাসান (আ.) জনৈকা স্ত্রীর দ্বারা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে তিনি শাহাদত বরণ করেন। মানবীয় গুণাবলীর শ্রেষ্ঠত্বের দিক দিয়ে হযরত ইমাম হাসান (আ.) ছিলেন স্বীয় পিতা ইমাম আলী (আ.) এর স্মৃতিচিহ্ন এবং স্বীয় মাতামহ মহানবী (সা.)-এর প্রতিভু। মহানবী (সা.) যতদিন প্রকাশ্য দুনিয়াতে ছিলেন, হযরত ইমাম হাসান (আ.) ও হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) সবসময়ই তাঁর সাথে থাকতেন। এমনকি মহানবী (সা.) প্রায়ই তাঁদেরকে নিজের কাঁধেও চড়াতেন।
শীয়া ও সুন্নী উভয় সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসে মহানবী (সা.) বলেছেনঃ “আমার এই দু’সন্তানই (ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন) ইমাম, তারা দাঁড়িয়েই থাকুক অথবা বসেই থাকুক, সর্ব অবস্থাতেই তারা ইমাম”
(এখানে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা বলতে প্রকাশ্য খেলাফতের অধিকারী হওয়া বা না হওয়ার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে)। এ ছাড়া হযরত ইমাম হাসান (আ.)-এর ইমামতের পদাধিকার লাভ সম্পর্কে মহানবী (সা.) এবং হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর পক্ষ থেকে অসংখ্য হাদীস বিদ্যমান রয়েছে।
এমনকি হযরত ইমাম আলী (আ.) তাঁর সকল সন্তানদের প্রতি লক্ষ্য করে একই কথার পুনারুক্তি করেছিলেন। তিনি বলেছেনঃ “তোমরা আমার সন্তান এবং হাসান ও হুসাইন আল্লাহ্র নবীর সন্তান”।
হযরত ইমাম হাসান (আ.) হিজরী ৩য় সনে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রায় সাত বছরেরও কিছু বেশী সময় মহানবী (সা.)-এর সাহচর্য লাভ করতে সক্ষম হন। তিনি বিশ্ব নবী (সা.)-এর ওফাতের প্রায় তিন বা ছয় মাস পর যখন নবীকন্যা হযরত ফাতিমা (আ.) পরলোক গমন করেন, তখন তিনি তাঁর মহান পিতা হযরত আলী (আ.)-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হতে থাকেন। পিতার শাহাদতের পর মহান আল্লাহ্র নির্দেশে এবং পিতার ‘ওসিয়াত’ অনুযায়ী তিনি ইমামতের পদে আসীন হন। অতঃপর তিনি প্রকাশ্য খেলাফতের পদাধিকারীও হন। প্রায় ৬মাস যাবৎ তিনি খলিফা হিসেবে মুসলমানদের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম পরিচালনা করেন। কিন্তু মুয়াবিয়া ছিলেন নবীবংশের চরম ও চিরশত্রু। ইসলামী রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় খেলাফতের মসনদ অধিকারের লোভে ইতিপূর্বে বহু যুদ্ধের সুত্রপাত সে ঘটিয়ে ছিল তখন ইরাক ছিল হযরত ইমাম হাসান (আ.)-এর খেলাফতের রাজধানী। মুয়াবিয়া হযরত ইমাম হাসান (আ.)-কে কেন্দ্রীয় খেলাফতের পদ থেকে অপসারণের লক্ষ্যে ইরাক সীমান্তে সেনাবাহিনী প্রেরণ করে। একইসাথে বিপুল পরিমাণ অর্থের ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে গোপনে ইমাম হাসান (আ.)-এর সেনাবাহিনীর বহু অফিসারকে ক্রয় করে। এমনকি ঘুষ ছাড়াও অসংখ্য প্রতারণামূলক লোভনীয় প্রতিশ্রুতি প্রদানের মাধ্যমে মুয়াবিয়া, ইমাম হাসান (আ.)-এর সেনাবাহিনীকে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘটাতে সক্ষম হয়। যার পরিণামে হযরত ইমাম হাসান (আ.) মুয়াবিয়ার সাথে সন্ধি করতে বাধ্য হন। উক্ত চুক্তি অনুসারে হযরত ইমাম হাসান (আ.) প্রকাশ্য খেলাফতের পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
চুক্তির শর্ত অনুসারে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পরপরই হযরত ইমাম হাসান (আ.) পুনরায় খলিফা হবেন এবং খেলাফতের পদ নবীবংশের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। আর এই অর্ন্তবর্তীকালীন সময়ে মুয়াবিয়া রাসুল বংশের অনুসারীদের যে কোন প্রকারের রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন থেকে বিরত থাকবে। আর এভাবেই মুয়াবিয়া কেন্দ্রীয় খেলাফতের পদ দখল করতে সর্মথ হয় এবং ইরাকে প্রবেশ করে। কিন্তু ইরাকে প্রবেশ করে সে এক জনসভার আয়োজন করে। ঐ জনসভায় প্রকাশ্যভাবে জনসমক্ষে সে ইমাম হাসান (আ.)-এর সাথে ইতিপূর্বে সম্পাদিত চুক্তিকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করে।
আর তখন থেকেই সে পবিত্র আহলে বাইত (নবীবংশ) ও তাঁদের অনুসারীদের উপর সর্বাত্মক অত্যাচার ও নিপীড়ন চালাতে শুরু করে। হযরত ইমাম হাসান (আ.) তাঁর দীর্ঘ দশ বছর সময়কালীন ইমামতের যুগে শাসকগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে সৃষ্ট প্রচন্ডচাপের মুখে এক শ্বাসরূদ্ধকর পরিবেশে জীবন যাপন করতে বাধ্য হন। এমনকি নিজের ঘরের মধ্যকার নিরাপত্তাও তিনি হারাতে বাধ্য হন। অবশেষে হিজরী ৫০সনে মুয়াবিয়ার ষড়যন্ত্রে ইমাম হাসান (আ.) জনৈকা স্ত্রীর দ্বারা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে তিনি শাহাদত বরণ করেন। মানবীয় গুণাবলীর শ্রেষ্ঠত্বের দিক দিয়ে হযরত ইমাম হাসান (আ.) ছিলেন স্বীয় পিতা ইমাম আলী (আ.) এর স্মৃতিচিহ্ন এবং স্বীয় মাতামহ মহানবী (সা.)-এর প্রতিভু। মহানবী (সা.) যতদিন প্রকাশ্য দুনিয়াতে ছিলেন, হযরত ইমাম হাসান (আ.) ও হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) সবসময়ই তাঁর সাথে থাকতেন। এমনকি মহানবী (সা.) প্রায়ই তাঁদেরকে নিজের কাঁধেও চড়াতেন।
শীয়া ও সুন্নী উভয় সূত্রে বর্ণিত একটি হাদীসে মহানবী (সা.) বলেছেনঃ “আমার এই দু’সন্তানই (ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন) ইমাম, তারা দাঁড়িয়েই থাকুক অথবা বসেই থাকুক, সর্ব অবস্থাতেই তারা ইমাম”
(এখানে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা বলতে প্রকাশ্য খেলাফতের অধিকারী হওয়া বা না হওয়ার প্রতিই ইঙ্গিত করা হয়েছে)। এ ছাড়া হযরত ইমাম হাসান (আ.)-এর ইমামতের পদাধিকার লাভ সম্পর্কে মহানবী (সা.) এবং হযরত ইমাম আলী (আ.)-এর পক্ষ থেকে অসংখ্য হাদীস বিদ্যমান রয়েছে।
No comments:
Post a Comment