আল্লাহ বলেন-
“পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে (মুহাম্মদকে) রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখার জন্য, তিনিই সর্বশ্রোতা; সর্বদ্রষ্টা।“
- সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১
“পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তাঁর বান্দাকে (মুহাম্মদকে) রজনীযোগে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম হতে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখার জন্য, তিনিই সর্বশ্রোতা; সর্বদ্রষ্টা।“
- সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ১
“নিশ্চয় সে তাকে আরেকবার দেখেছিল, সিদরাতুল মুন্তাহার নিকটে, যার কাছে অবস্থিত বসবাসের জান্নাত। যখন বৃক্ষটি দ্বারা আচ্ছন্ন হওয়ার, তদ্দারা আচ্ছন্ন ছিল। তাঁর দৃষ্টিবিভ্রম হয় নি এবং সীমালঙ্ঘনও করেনি। নিশ্চয় সে তার পালনকর্তার মহান নিদর্শনাবলী অবলোকন করেছেন।“
- সূরা নাজম, আয়াত: ১৩-১৮
- সূরা নাজম, আয়াত: ১৩-১৮
“অতঃপর তিনি তাঁর নিকটবর্তী হলেন, অতি নিকটবর্তী। ফলে তাঁদের মধ্যে দুই ধনুকের ব্যবধান রইল অথবা তারও কম। তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করার তা করলেন।“
- সূরা নাজম, আয়াত: ৮-১০
- সূরা নাজম, আয়াত: ৮-১০
“এভাবে আমি ইব্রাহিমকে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর পরিচালন ব্যবস্থা দেখাই, যাতে তিনি (ইব্রাহিম) নিশ্চিত বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়।“
- সূরা আনআম, আয়াত: ৭৫
- সূরা আনআম, আয়াত: ৭৫
সূরা বনি ইসরাইলে মুহাম্মদ সাঃ-এর মক্কা (মসজিদুল হারাম) থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস (মসজিদুল আকসা) পর্যন্ত এবং সূরা নাজমে ঊর্ধ্বাকাশে উত্তোলন ও ভ্রমণের অর্থাৎ মহাকাশ ভ্রমণের কথা উল্লেখ রয়েছে। সূরা আনআমেও হজরত ইব্রাহিম-এর ক্ষেত্রে অনুরূপ মহাকাশ ভ্রমণের বিষয় ঘোষিত হয়েছে। নিল আর্মস্ট্রংদের চন্দ্র বিজয় সেদিনের কথা, তারও ১৪০০ বছর আগে মুহাম্মদ সাঃ এবং এরও আগে ইব্রাহিম আঃ-এর মিরাজ মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জ্ঞানের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। বিজ্ঞান আজ যে জ্ঞানের কাছে মাথা নত করেছে অবশ্যই তা মানবীয় জ্ঞান নয় বরং ওহির জ্ঞান এবং 'মহাবিজ্ঞানী' আল্লাহ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান।
মসজিদুল হারামমসজিদুল হারাম
বাইতুল মোকাদ্দাসবাইতুল মোকাদ্দাস
বাইতুল মোকাদ্দাসবাইতুল মোকাদ্দাস
আল কুরআনে কল্পনা বা মিথ্যার কোনো স্থান নেই, কোরআনে সবই সত্য। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে মুহাম্মদ সাঃ-এর মহাকাশ ভ্রমণকে কাল্পনিক বলার প্রশ্নই আসে না। এটা সন্দেহাতীতভাবে সত্য যে, মুহাম্মদ সাঃ-এর মিরাজ রূহানিকভাবে, নিদ্রাযোগে হয়নি, তা হয়েছে সজ্ঞানে সশরীরে এবং জাগ্রতাবস্থায়। যেমন হয়েছে মুসা আঃ-এর দলবলসহ হেঁটে নীল নদী পার হওয়া। ইব্রাহিম আঃ-এর নমরুদের বিশাল অগ্নিকুণ্ড থেকে মুক্তি পাওয়া, ঈসা আঃ-এর আকাশে আরোহণ এবং আবার দুনিয়াতে আগমন হওয়ার কথা। বিবি মরিয়মের স্বামী ছাড়া পুত্রসন্তান লাভ। এসবই সত্য এবং বাস্তব ঘটনা। মুহাম্মদ সাঃ-এর মিরাজও চিরসত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
মিরাজ বলতে মুসলিমরা যা বোঝেন-
মিরাজ অর্থ সিঁড়ি বা সোপান। মিরাজ শব্দটি আরবি ‘উরুজ’ শব্দ থেকে এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ উপরে আরোহণ করা। মুহাম্মদ সাঃ-এর বোরাকযোগে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা ভ্রমণ এবং সেখান থেকে ঊর্ধ্বে এবং ‘রফরফ’যোগে ঊর্ধ্বালোকে পরিভ্রমণের মাধ্যমে সৃষ্টির অনন্ত রহস্য ও অলৌকিক নিদর্শনাবলী অবলোকন, আল্লাহপাকের সান্নিধ্য অর্জন এবং উভয় বন্ধুর বাক্যালাপ।
মিরাজ অর্থ সিঁড়ি বা সোপান। মিরাজ শব্দটি আরবি ‘উরুজ’ শব্দ থেকে এসেছে। যার আভিধানিক অর্থ উপরে আরোহণ করা। মুহাম্মদ সাঃ-এর বোরাকযোগে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা ভ্রমণ এবং সেখান থেকে ঊর্ধ্বে এবং ‘রফরফ’যোগে ঊর্ধ্বালোকে পরিভ্রমণের মাধ্যমে সৃষ্টির অনন্ত রহস্য ও অলৌকিক নিদর্শনাবলী অবলোকন, আল্লাহপাকের সান্নিধ্য অর্জন এবং উভয় বন্ধুর বাক্যালাপ।
আল্লাহ পাক ইচ্ছে করলে কোনরূপ অবলম্বন ছাড়াই মুহূর্তের মধ্যে তাঁর প্রিয় বন্ধুকে সপ্ত আকাশ পরিভ্রমণ করাতে পারতেন, তাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু ছিল না। তারপরও তিনি মুহাম্মদ সাঃ-কে ‘বোরাক’ ও ‘রফরফ’যোগে ভ্রমণ করিয়েছেন।
শিল্পীর কল্পনায় বোরাকশিল্পীর কল্পনায় বোরাক
অনেকের কৌতুহল জাগতে পারে, ‘বোরাক’ ও ‘রফরফ’ কী জাতীয় বাহন?
‘বোরাক’ আরবি ‘বরকুন’ ধাতু হতে নির্গত, যার অর্থ বিদ্যুৎ (Electricity)। এটা নূরের তৈরি জান্নাতি বাহন, যা বিদ্যুতের চেয়েও ক্ষিপ্র গতিসম্পন্ন। আলোর গতি অপেক্ষা এর গতি অনেক বেশি।
‘রফরফ’-এর আভিধানিক অর্থ বিছানা, নরম তুলতুলে, সবুজ। সূর্যরশ্মির চেয়েও ক্ষিপ্র তার গতিবেগ। এ রহমতি বাহন দু’টির গতি আলোর গতির চেয়েও কল্পনাতীত দ্রুত হওয়ার কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে মুহাম্মদ সাঃ-এর সপ্তাকাশ ভ্রমণ সম্ভব হয়েছে। উল্লেখ্য, আলোর গতি প্রতি সেকেণ্ডে ১ লাখ ৮৬ হাজার মাইল।
বিরুদ্ধবাদীরা (নাস্তিক) বলেন, “পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি থাকায় শূন্য মণ্ডলের যে কোন স্থূল বস্তুকে সে নিচের দিকে টেনে নামায়। কোন স্থূলদেহী মানুষের দ্বারা মহাকাশ ভ্রমণ সম্ভব নয়”।
মহাকাশযন্ত্রমহাকাশযন্ত্র
অর্থাৎ মধ্যাকর্ষণ শক্তির দোহাই দিয়ে তারা মিরাজকে অস্বীকার করেন। বিরুদ্ধবাদী (নাস্তিক)-দের সে নীতিকে আধুনিক বিজ্ঞানীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। শূন্যে অবস্থিত যেকোনো স্থূল বস্তুকে পৃথিবী সব সময় সমানভাবে আকর্ষণ করতে পারে না, তা আজ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে। তাদের মতে, প্রত্যেক গ্রহেরই নিজস্ব আকর্ষণ শক্তি রয়েছে। সূর্য ও পৃথিবী একে অন্যকে টেনে রাখছে। এ টানাটানির ফলে উভয়ের মাঝখানে এমন একটা স্থান আছে যেখানে কোনো আকর্ষণ-বিকর্ষণ নেই। যার ফলে পৃথিবীর কোনো বস্তু যদি সেই সীমানায় পৌঁছায় বা পার হয়ে সূর্যের সীমানায় যেতে পারে, তাহলে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না।
গতিবিজ্ঞানের (Dynamics) মতে, পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুকে প্রতি সেকেন্ডে ৬.৯০ অর্থাৎ সাত মাইল বেগে ঊর্ধ্বালোকে ছুড়ে দেয়া হলে তা আর পৃথিবীতে ফিরে আসবে না। আবার পৃথিবী থেকে কোনো বস্তু যতই ওপরে উঠবে ততই তার ওজন কমবে। যার ফলে অগ্রগতি ক্রমেই সহজ হয়ে যাবে।
আধুনিক বিজ্ঞানীরা বলেন,
“পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুর দূরত্ব যতই বাড়ে, ততই তার ওজন কমে, পৃথিবীর এক পাউন্ড ওজনের কোন বস্তু ১২ হাজার মাইল ঊর্ধ্বে মাত্র এক আউন্স হয়ে যায়। এ থেকে বলা যায়, পৃথিবী থেকে যে যত ঊর্ধ্বে গমন করবে, তার ততই অগ্রগতি হবে।“
- The Exploration of Space, P-15
“পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুর দূরত্ব যতই বাড়ে, ততই তার ওজন কমে, পৃথিবীর এক পাউন্ড ওজনের কোন বস্তু ১২ হাজার মাইল ঊর্ধ্বে মাত্র এক আউন্স হয়ে যায়। এ থেকে বলা যায়, পৃথিবী থেকে যে যত ঊর্ধ্বে গমন করবে, তার ততই অগ্রগতি হবে।“
- The Exploration of Space, P-15
বিজ্ঞানীরা হিসাব কষে দেখেছেন, ঘণ্টায় ২৫ হাজার মাইল বেগে ঊর্ধ্বালোকে ছুটতে পারলে পৃথিবী থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। একেই মুক্তিগতি (Escape velocity) বলে। গতি বিজ্ঞানের এসব নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে মানুষ চাঁদে যেতে পেরেছে এবং মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। তাই মাধ্যাকর্ষের যুক্তি দিয়ে মুহাম্মদ সাঃ-এর মিরাজ গমনের সত্যকে কেউ উড়িয়ে দিতে পারে না।
নাস্তিকদের মতে, মুহাম্মদ সাঃ-এর দেহ জড়দেহ, তাই তা নভোলোকে পৌঁছতে পারে না। আল্লাহর সৃষ্টিজগতে দেখা যায়, বুনিয়াদ এক হলেও প্রতিটি বস্তুরই ভিন্ন ভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। যেমন, কয়লা থেকে হীরক প্রস্তুত হয়। উভয়ই পদার্থ। কিন্তু তাই বলে এ দু’টি পদার্থ এক নয়। তা ছাড়া সব পদার্থের সবখানেই ধর্ম এক নয়। যেমন কাঁচ জড় পদার্থ, বাধা দেয়া তার ধর্ম। এ জন্য একটা কাঠ ভেদ করে তার মধ্য দিয়ে আলোক রশ্মি যেতে পারে না। কিন্তু কাঁচ জড় পদার্থ, তার বুকের ভেতর ভেদ করে আলোক রশ্মি চলে যায়, বাধা দিতে পারে না। আবার দেখা যায়, ‘পানি’র কঠিন, তরল ও বায়বীয় তিন অবস্থায় ভিন্ন ভিন্ন তিনটি রূপ, একটি থেকে অন্যটি ভিন্ন। এমন অনেক অস্বচ্ছ পদার্থ রয়েছে যার ভেতরে সাধারণ আলো প্রবেশ করতে পারে না কিন্তু রঞ্জন রশ্মি বা এক্সরে তা ভেদ করে চলে যায়। বিজ্ঞানীদের মতে, আমরা যে পদার্থকে দেখি তা-ই যে তার একমাত্র সত্য রূপ, এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না। মহান আল্লাহ মুহাম্মদ সাঃ-কে কুদরতীভাবে এই বিশাল পথ অতিক্রম করান। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
মুমিনদের কল্পিত বোরাকমুমিনদের কল্পিত বোরাক
আধুনিক বিজ্ঞানীরা মহাশূন্যে যাওয়ার আগে নভোচারীদের দেহ খুব সতর্কতার সাথে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উপযুক্ততা যাচাই-বাছাই করে থাকেন। বোরাকে সওয়ার হওয়ার আগেও মহাবিজ্ঞানী আল্লাহর নির্দেশে জিবরাঈল আঃ রাসূলপাক সাঃ-এর বক্ষ সযত্নে বিদীর্ণপূর্বক জড়ধর্মী স্বভাব দূর করে আলোর স্বভাব স্থাপন করেন। গ্যাসীয় পদার্থের মধ্যে টিকে থাকার জন্য কুদরতি ওষুধ তাঁর শরীরে প্রয়োগ করেন। কল্ব মোবারকের মধ্যেও বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করেন, যাতে মহাকাশ গমনের সময় তাঁর মধ্যে কোনো প্রকার ক্লান্তি না আসে, মহাকাশের নিদর্শনাবলি দেখে কোনো ভয়ভীতি সঞ্চার না হয় এবং আল্লাহর সাক্ষাত লাভের সময় যেন সৃষ্টি না হয় কোনো প্রকার বাধাবিপত্তি। এক কথায় ঊর্ধ্বজগতের বিভিন্ন কুদরত প্রত্যক্ষ করার ক্ষমতা লাভে তাঁকে সক্ষম করে নেন আল্লাহপাক। তাই আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে মিরাজকে অবৈজ্ঞানিক রূহানিক বা কাল্পনিক বলার প্রশ্নই আসে না। নবি মুহাম্মদের মিরাজ হয়েছিল স্বশরীরে, স্বজ্ঞানে ও জাগ্রতাবস্থায়।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের ভাষায় “স্ট্যান্ডার্ড টাইম বলে কোনো টাইম নেই, সব টাইমই লোকাল অর্থাৎ স্থানীয়ভাবে প্রযোজ্য। আল্লাহর কাছে স্থান, কাল, গতি ও সময়ের কোনো বন্ধন নেই। তিনি যখন যা ইচ্ছা করেন মুহূর্তের মধ্যেই তা ঘটিয়ে থাকেন। তাঁর রহস্য সম্পর্কে মানুষের জ্ঞান অক্ষম।“
নাস্তিকরা প্রশ্ন করেন, “এত অল্প সময়ের মধ্যে নবি মুহাম্মদ বাইতুল মুকাদ্দাস হয়ে সাত আসমানের ওপর সিদরাতুল মুনতাহা পেরিয়ে আল্লাহর সাথে কথাবার্তা বলে আবার মক্কায় ফিরে এলেন, তা কী করে সম্ভব!?”
ইসলামি সময়ইসলামি সময়
মূলত: আল্লাহর সময়ের সাথে মানুষের পৃথিবীর সময়ের মিল হবে না। বিজ্ঞানীরা বলেন, আমাদের ঘড়ি অন্য গ্রহে অচল। এ বিষয়ে আধুনিক বিজ্ঞানীদের মত, স্বভাবের প্রকৃত সময় (True Time of Nature) সম্পর্কে আজো আমরা জানি না। বিজ্ঞানীরা জানান, আলোর গতির যতো নিকটে যাওয়া যায়, ততই সময় শ্লথ হয়ে আসে। আলোর গতি অপেক্ষা বেশি দ্রুত গতিতে গেলে সময় উল্টো দিকে বয়। মিরাজের বেলায়ও তা হয়েছিল। মুহাম্মদ সাঃ-এর বাহনের গতি আলোর গতি অপেক্ষা অবশ্যই বেশি ছিল। তাই মিরাজ থেকে ফিরে এসে উম্মে হানির গৃহে বিছানা উষ্ণ পাওয়ার বিষয়।
আল্লাহ কেন মানবীয় আহসান সূরতে দর্শন দিয়ে থাকে ? কারণ আল্লাহ তায়ালা অসীম এবং পরমাত্মা । মানূষ সসীম এবং অণুআত্মা । সসীম কখনই অসীম কে পূর্ণভাবে ধারণ করতে পারে না তাই অসীম(আল্লাহ) মানবীয় সুরতেই সসীম(মানূষকে) দর্শন দিয়ে থাকেন । উদাহরণস্বরুপ- সূর্য কে আমরা কয়েক সেকেন্ডের বেশী স্থায়ী ভাবে দেখতে পারি না । চাইলেও পারা যায় না । জোর করে বেশী সময় ধরে সূর্যের দিকে তাকালে চোখ নষ্ঠ হয়ে যাবে । কিন্তু চন্দ্রের দিকে আমরা তাকিয়ে আমরা তার সৌন্দর্য অনেকক্ষণ অবলোকন করতে পারি । এতে আমাদের চোখের কোন সমস্যা হয় না । চন্দ্র তার জ্যোতি পেয়েছে সূর্য হতে । তদ্রুপ আল্লাহ তায়ালার জ্যোতি(নূরে তাজাল্লী) নূরে মোহাম্মদী হতে সহনীয় পর্যায়ে মানূষের ভিতর রুহ ও তার সিফাত হিসাবে দেওয়া হয়েছে যা সাধকের কাছে মানবীয় আহসান সূরতে দর্শন হয় । মানব তার নিজকে যখন চিনে নিজের মধ্যে ধ্যানের ঘরে তখন আল্লাহর দর্শন তার হয়ে যায় ।
এখন আমরা সূরা বণি ইসরাঈল ও নাজমের আয়াতে উললেখিত ''আবদুহ'' শবদ নিয়ে কিছু আলোচনা করবো । আবদ্ ও আবদুহুর মর্যাদা এক নয়। আবদ হলো আল্লাহ তায়ালার ঐ বান্দা যে আল্লাহ তায়ালাকে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে। আর আবদুহু হলো ঐ বান্দা যাকে পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা নিজেই ব্যাকুল থাকে। আবদ নিজে আশেক হয়ে তার মাশুকের প্রেমে (আললাহ) রত হয়। আর আবদুহুর প্রেমে আললাহ নিজেই আশেক হন। কেননা আবদুহু ই সুষ্টির সকল রহস্য ভেদ । আবদুহু হতেই সকল সুষ্টি ।
হযরত আল্লামা ইকবাল(রহঃ) বলেছেন - ''জামানা হচ্ছে 'আবদুহু' আর 'আবদুহু' হতেই জমানার অস্তিত্ব । আমরা সমস্ত সৃষ্টি বিভিন্ন রং এবং বর্ণের কিন্তু 'আবদুহু' সব কিছুর উদ্ধে । সৃস্টির সব কিছুই 'আবদুহু'। আর 'আবদুহু' গোটা জাহানের গুপ্তভেদ । কেউ ই 'আবদুহু'র গোপন ভেদ সম্পর্কে অবগত নয় । কারণ 'আবদুহু' তো ইল্লাল্লাহ'র ভেদ ভিন্ন আর কিছুই নহে । 'আবদুহু' সমস্ত তাকদীরের ছবি অঙ্কনকারী । আর এই সারমর্ম তুমি অনুধাবন করতে পারবেনা , যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি মাকামে ''মা রামাইতা'' অবলোকন কর । (শানে হাবীবুর রহমান,পৃষ্টা-১৪৩)
আহা কত সুন্দর করে বলেছেন আল্লামা ইকবাল(রহঃ)। সমগ্র সুষ্টিই আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম হতে আগত । তাকে নিয়েই কেন্দ্রমুখী । তাই সমগ্র সুষ্টির সকল প্র্রেমের মূল মোহাম্মদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম। এটাই মিরাজের আসল কথা ।
হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) আললাহকে দেখার জন্য ব্যাকুল ছিলেন । সুতরাং হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) হলেন ''আবদ' । অপরদিকে আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম হলেন ''আবদুহু'' যাকে মহান আললাহ তার সমসতো জগত দেখানোর জন্য এবং নিজে তার কাছে প্রকাশ হওয়ার জন্য ব্যাকুল ছিলেন এবং মেরাজে তাই দাওয়াত করে নিলেন। হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) তুর এ সায়নাহ উপত্যকায় আল্লাহ তাজাল্লী দর্শনে বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন । কেননা আল্লাহ তায়ালা তাকে বলেছিল লান-তারানি অর্থাত তুমি আমাকে দেখতে পারবে না । ফলে হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) পূর্ণভাবে আল্লাহর তাজাল্লী দর্শন করতে পারলেন না । আল্লাহ তায়ালার তাজাল্লীর একটু দর্শনেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেল। অপরদিকে আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম কে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দরশন দেওয়ার জন্য উদগ্রিব। আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসার মতো পিয়ারা নবীজীকে দৃষ্টি ভ্রম করেন নি বরং তাকে মহা সম্মানের সহিত আদর করে মায়া করে দয়া করে কাছে নিয়ে পরিপুর্ণ দরশন করায়ে বুঝালে দিলেন তিনি অন্য সব নবী বা অবতার থেকে আলাদা এবং অনেক অনেক উচ্চে। সৃষ্টির সকল নবী,পয়গম্বর থেকে শুরু করে সকল মানূষ আল্লাহ তায়ালাকে ভালবাসতে চায় রাজি খুশি করতে চায় কিন্তু মহান রব তায়ালা তার মাহবুব হাবিব-আল্লাহ কে রাজি খুশি করতে চায় । এর কারণ কি তা ফেরেশতারাও বুঝতে পারেনি । সুষ্টির শ্রেষ্ট মানুষ হয়ে ও বুঝতে চেষ্টা করছি না। সত্যি আমরা হত ভাগা যে রাসূল আল্লাহ কে চিনতে পারছি না
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ পাক বলেন - ''আমি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কে আমার মূখমন্ডলের নূরের অবয়বে(গঠনে) সৃষ্টি করেছি। ( সিররুল আসরার : বড়পীর গাউসুল আযম দস্তগীর ,পৃষ্টা-৬০ )
হযরত আকাঁ ও মওলা হুজুর সৈয়্যেদেনা ওয়া মাওলানা আলী আব্দুল কাদের শামস্ উল- কাদেরী আল মারুফ সৈয়দ শাহ মুরশিদ আলী আল কাদেরী আল জিলানী আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী আলা জাদ্দিহি নাবীয়ানা আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম ওরফে মওলা পাক বলেন-
নূরে খালেক সুরতে ইনসাঁ বানা নামে খোদা
লো হুয়ে পয়দা নবী সাল্লে আলা নামে খোদা । ( দিওয়ান-ই-পাক)
অর্থ : সৃষ্টিকর্তার নূর ধরলো ইনসানের সুরত খোদার নামে
কি যে খুশি ! পয়দা হলেন নবী খোদার নামে ।
মিরাজ শরীফ হলো রাসূল আল্লাহকে চিনার উত্তম মাধ্যম। মিরাজ শরীফ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম পরিচয় ও রহস্যভেদ খুলে দিয়েছে তবুও আমরা বুঝতে পারছি না। প্রিয় নবীর পবিত্র বংশধর মওলা পাক তার বাণীতে সে কথাই জানিয়ে দিলেন।
কি গুপ্ত-ব্যক্ত আলাপ হয়েছে মিরাজে আল্লাহ ও রাসূলের মধ্যে কোরআন ও তা প্রকাশ করেনি শুধুমাত্র তার ইশারা দিয়েছে। কারণ আল্লাহ ও তার রাসূল ভাল করেই জানেন এসব গুপ্ত আলাপ প্রকাশ্যে বলা হলে সমাজে হানাহানি সুষ্টি হবে । তাই রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম হাকিকত ও মারিফতের ভেদের কথা মওলা আলী করমুল্লাহ ওযাজহু ও তার আহলে বাইত এবং কিছু কিছু সাহাবা-কেরামের কাছে প্রকাশ করেছেন। মিরাজ শরীফে আল্লাহর সাথে কি কথা হলো, কি রুপে আল্লাহ কে দেখলেন এবং কি প্রেম তত্ত্ব বিনিময় হলো তা বড়ই রহস্য ময় সাধক সমাজে। আরেফ সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহ কি সুন্দর বলেছেন-
নিগূঢ় প্রেম কথাটি আমি আজ সুধাই কার কাছে
কোন সে প্রেমে আল্লাহ নবী মিশিলেন মিরাজে ?
নিগূঢ় প্রেম রহস্য আশেক ও মাশুকের মধ্যে হয় । কি প্রেম রহস্য আল্লাহ ও রাসূলের মধ্যে তা কাকে সুধাবে লালন সাইজি সে ভাবনাই ভেবেছেন। সবাই তো সে গুরু বাক্য শিরোধার্য করবে না ।
বাউল সাধক লালন শাহ তার গানে প্রশ্ন করেছেন -
কে এল ঐ মদিনায় রাসূল নামে
কায়াধারী হয়ে কেন ভবে তাহার ছবি নাই ।
লালন সাইজি অন্য এক জায়গায় বলেছেন-
ভূলনা মন কারো ভূলে
রাসূলের দ্বীন সত্য মানো ডাক সদা মওলা বলে।
আহা সাইজি এখানে কি সুন্দর বলেছেন। রাসুলের দ্বীন সত্য মেনে তাকে মওলা বলে ডাকতে বলছেন। কেননা এই মওলা ই(রাসূলে পাক) আমাদের পারের কান্ডারী। সাধনায় সিদ্ধির মূল পথ। এই মওলাই মানব বেশে মুক্তির পথ দেখিছেন। মিরাজ শরীফে এই মওলা তার মহা মওলার সাথে প্রেম খেলা খেলেছেন । আমাদের মহান আললাহ দেখার সে খোশ নসীব হোক হে মওলা ।
হে আললাহ ! আমাদের কে সত্য জানার ও বুঝার তৌফিক দিন । আমীন । সুমমা আমীন । আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মোহাম্মদ ওয়ালা আলে মোহাম্মদ।
আল্লাহ কেন মানবীয় আহসান সূরতে দর্শন দিয়ে থাকে ? কারণ আল্লাহ তায়ালা অসীম এবং পরমাত্মা । মানূষ সসীম এবং অণুআত্মা । সসীম কখনই অসীম কে পূর্ণভাবে ধারণ করতে পারে না তাই অসীম(আল্লাহ) মানবীয় সুরতেই সসীম(মানূষকে) দর্শন দিয়ে থাকেন । উদাহরণস্বরুপ- সূর্য কে আমরা কয়েক সেকেন্ডের বেশী স্থায়ী ভাবে দেখতে পারি না । চাইলেও পারা যায় না । জোর করে বেশী সময় ধরে সূর্যের দিকে তাকালে চোখ নষ্ঠ হয়ে যাবে । কিন্তু চন্দ্রের দিকে আমরা তাকিয়ে আমরা তার সৌন্দর্য অনেকক্ষণ অবলোকন করতে পারি । এতে আমাদের চোখের কোন সমস্যা হয় না । চন্দ্র তার জ্যোতি পেয়েছে সূর্য হতে । তদ্রুপ আল্লাহ তায়ালার জ্যোতি(নূরে তাজাল্লী) নূরে মোহাম্মদী হতে সহনীয় পর্যায়ে মানূষের ভিতর রুহ ও তার সিফাত হিসাবে দেওয়া হয়েছে যা সাধকের কাছে মানবীয় আহসান সূরতে দর্শন হয় । মানব তার নিজকে যখন চিনে নিজের মধ্যে ধ্যানের ঘরে তখন আল্লাহর দর্শন তার হয়ে যায় ।
এখন আমরা সূরা বণি ইসরাঈল ও নাজমের আয়াতে উললেখিত ''আবদুহ'' শবদ নিয়ে কিছু আলোচনা করবো । আবদ্ ও আবদুহুর মর্যাদা এক নয়। আবদ হলো আল্লাহ তায়ালার ঐ বান্দা যে আল্লাহ তায়ালাকে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকে। আর আবদুহু হলো ঐ বান্দা যাকে পাওয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা নিজেই ব্যাকুল থাকে। আবদ নিজে আশেক হয়ে তার মাশুকের প্রেমে (আললাহ) রত হয়। আর আবদুহুর প্রেমে আললাহ নিজেই আশেক হন। কেননা আবদুহু ই সুষ্টির সকল রহস্য ভেদ । আবদুহু হতেই সকল সুষ্টি ।
হযরত আল্লামা ইকবাল(রহঃ) বলেছেন - ''জামানা হচ্ছে 'আবদুহু' আর 'আবদুহু' হতেই জমানার অস্তিত্ব । আমরা সমস্ত সৃষ্টি বিভিন্ন রং এবং বর্ণের কিন্তু 'আবদুহু' সব কিছুর উদ্ধে । সৃস্টির সব কিছুই 'আবদুহু'। আর 'আবদুহু' গোটা জাহানের গুপ্তভেদ । কেউ ই 'আবদুহু'র গোপন ভেদ সম্পর্কে অবগত নয় । কারণ 'আবদুহু' তো ইল্লাল্লাহ'র ভেদ ভিন্ন আর কিছুই নহে । 'আবদুহু' সমস্ত তাকদীরের ছবি অঙ্কনকারী । আর এই সারমর্ম তুমি অনুধাবন করতে পারবেনা , যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি মাকামে ''মা রামাইতা'' অবলোকন কর । (শানে হাবীবুর রহমান,পৃষ্টা-১৪৩)
আহা কত সুন্দর করে বলেছেন আল্লামা ইকবাল(রহঃ)। সমগ্র সুষ্টিই আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম হতে আগত । তাকে নিয়েই কেন্দ্রমুখী । তাই সমগ্র সুষ্টির সকল প্র্রেমের মূল মোহাম্মদ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম। এটাই মিরাজের আসল কথা ।
হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) আললাহকে দেখার জন্য ব্যাকুল ছিলেন । সুতরাং হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) হলেন ''আবদ' । অপরদিকে আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম হলেন ''আবদুহু'' যাকে মহান আললাহ তার সমসতো জগত দেখানোর জন্য এবং নিজে তার কাছে প্রকাশ হওয়ার জন্য ব্যাকুল ছিলেন এবং মেরাজে তাই দাওয়াত করে নিলেন। হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) তুর এ সায়নাহ উপত্যকায় আল্লাহ তাজাল্লী দর্শনে বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন । কেননা আল্লাহ তায়ালা তাকে বলেছিল লান-তারানি অর্থাত তুমি আমাকে দেখতে পারবে না । ফলে হযরত মুসা কালিমুল্লাহ (আঃ) পূর্ণভাবে আল্লাহর তাজাল্লী দর্শন করতে পারলেন না । আল্লাহ তায়ালার তাজাল্লীর একটু দর্শনেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেল। অপরদিকে আহমদ মোস্তফা মোহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম কে আল্লাহ তায়ালা নিজেই দরশন দেওয়ার জন্য উদগ্রিব। আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসার মতো পিয়ারা নবীজীকে দৃষ্টি ভ্রম করেন নি বরং তাকে মহা সম্মানের সহিত আদর করে মায়া করে দয়া করে কাছে নিয়ে পরিপুর্ণ দরশন করায়ে বুঝালে দিলেন তিনি অন্য সব নবী বা অবতার থেকে আলাদা এবং অনেক অনেক উচ্চে। সৃষ্টির সকল নবী,পয়গম্বর থেকে শুরু করে সকল মানূষ আল্লাহ তায়ালাকে ভালবাসতে চায় রাজি খুশি করতে চায় কিন্তু মহান রব তায়ালা তার মাহবুব হাবিব-আল্লাহ কে রাজি খুশি করতে চায় । এর কারণ কি তা ফেরেশতারাও বুঝতে পারেনি । সুষ্টির শ্রেষ্ট মানুষ হয়ে ও বুঝতে চেষ্টা করছি না। সত্যি আমরা হত ভাগা যে রাসূল আল্লাহ কে চিনতে পারছি না
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ পাক বলেন - ''আমি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম কে আমার মূখমন্ডলের নূরের অবয়বে(গঠনে) সৃষ্টি করেছি। ( সিররুল আসরার : বড়পীর গাউসুল আযম দস্তগীর ,পৃষ্টা-৬০ )
হযরত আকাঁ ও মওলা হুজুর সৈয়্যেদেনা ওয়া মাওলানা আলী আব্দুল কাদের শামস্ উল- কাদেরী আল মারুফ সৈয়দ শাহ মুরশিদ আলী আল কাদেরী আল জিলানী আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী আলা জাদ্দিহি নাবীয়ানা আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম ওরফে মওলা পাক বলেন-
নূরে খালেক সুরতে ইনসাঁ বানা নামে খোদা
লো হুয়ে পয়দা নবী সাল্লে আলা নামে খোদা । ( দিওয়ান-ই-পাক)
অর্থ : সৃষ্টিকর্তার নূর ধরলো ইনসানের সুরত খোদার নামে
কি যে খুশি ! পয়দা হলেন নবী খোদার নামে ।
মিরাজ শরীফ হলো রাসূল আল্লাহকে চিনার উত্তম মাধ্যম। মিরাজ শরীফ মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম পরিচয় ও রহস্যভেদ খুলে দিয়েছে তবুও আমরা বুঝতে পারছি না। প্রিয় নবীর পবিত্র বংশধর মওলা পাক তার বাণীতে সে কথাই জানিয়ে দিলেন।
কি গুপ্ত-ব্যক্ত আলাপ হয়েছে মিরাজে আল্লাহ ও রাসূলের মধ্যে কোরআন ও তা প্রকাশ করেনি শুধুমাত্র তার ইশারা দিয়েছে। কারণ আল্লাহ ও তার রাসূল ভাল করেই জানেন এসব গুপ্ত আলাপ প্রকাশ্যে বলা হলে সমাজে হানাহানি সুষ্টি হবে । তাই রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহর ওয়া সাল্লাম হাকিকত ও মারিফতের ভেদের কথা মওলা আলী করমুল্লাহ ওযাজহু ও তার আহলে বাইত এবং কিছু কিছু সাহাবা-কেরামের কাছে প্রকাশ করেছেন। মিরাজ শরীফে আল্লাহর সাথে কি কথা হলো, কি রুপে আল্লাহ কে দেখলেন এবং কি প্রেম তত্ত্ব বিনিময় হলো তা বড়ই রহস্য ময় সাধক সমাজে। আরেফ সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহ কি সুন্দর বলেছেন-
নিগূঢ় প্রেম কথাটি আমি আজ সুধাই কার কাছে
কোন সে প্রেমে আল্লাহ নবী মিশিলেন মিরাজে ?
নিগূঢ় প্রেম রহস্য আশেক ও মাশুকের মধ্যে হয় । কি প্রেম রহস্য আল্লাহ ও রাসূলের মধ্যে তা কাকে সুধাবে লালন সাইজি সে ভাবনাই ভেবেছেন। সবাই তো সে গুরু বাক্য শিরোধার্য করবে না ।
বাউল সাধক লালন শাহ তার গানে প্রশ্ন করেছেন -
কে এল ঐ মদিনায় রাসূল নামে
কায়াধারী হয়ে কেন ভবে তাহার ছবি নাই ।
লালন সাইজি অন্য এক জায়গায় বলেছেন-
ভূলনা মন কারো ভূলে
রাসূলের দ্বীন সত্য মানো ডাক সদা মওলা বলে।
আহা সাইজি এখানে কি সুন্দর বলেছেন। রাসুলের দ্বীন সত্য মেনে তাকে মওলা বলে ডাকতে বলছেন। কেননা এই মওলা ই(রাসূলে পাক) আমাদের পারের কান্ডারী। সাধনায় সিদ্ধির মূল পথ। এই মওলাই মানব বেশে মুক্তির পথ দেখিছেন। মিরাজ শরীফে এই মওলা তার মহা মওলার সাথে প্রেম খেলা খেলেছেন । আমাদের মহান আললাহ দেখার সে খোশ নসীব হোক হে মওলা ।
হে আললাহ ! আমাদের কে সত্য জানার ও বুঝার তৌফিক দিন । আমীন । সুমমা আমীন । আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মোহাম্মদ ওয়ালা আলে মোহাম্মদ।
No comments:
Post a Comment