Friday, July 1, 2016

জাত ও সিফাত

জাত ও সিফাত
তাসাউফ শব্দটি পবিত্র কোরানের ৬২৩৬ আয়াতের মধ্যে কোথাও ব্যাবহার হয়নি।তাই এ শব্দটিকে আরবী শব্দ মানতে আরবী বিশারদরা রাজি নয়।কিন্তু মূলতঃই তাসাউফ শব্দটি আরবী।যার বাংলা অর্থ পরিস্কারকারী।আরেকটু খোলসা করলে অর্থ দাঁড়াই, যে পরিস্কার কর্মে রত তাহাকেই তাসাউফ বলে।
আরবী সাফ শব্দ থেকে তাসাউফ শব্দের উৎপত্তি।আরবী সাফ শব্দের অর্থ পরিস্কার ,সারিবদ্ধ।সফফা শব্দের অর্থ পরিস্কার করা । মূসফফী শব্দের অর্থ পরিস্কারক বা যাহা দ্বারা পরিস্কার করা হয়।আর মুসফফা শব্দের অর্থ পরিস্কৃত যাহা পরিস্কার হয়েছে।আর এলমে তাসাউফ শব্দের বাংলা অর্থ যে জ্ঞান পরিস্কার কর্মে রত। আর এলমে তাসাউফের ভাষা বলতে বুঝানো হয় জ্ঞান পরিস্কারের সরঞ্জাম সামগ্রীকে।
পবিত্র কোরানের ৬১ তম সূরাটির নাম, সূরায়ে সাফ।এই সাফ থেকেই তাসাউফের উৎপত্তি।
এবার আসুন তালিমে।
তালিমের দৃষ্টিতে জীবের উৎপত্তি হয়-
নূর বা সাফা বা পরিস্কার কারক ১ অণু, আব বা পানি ১ অণু, আতশ বা আগুন ১ অণু, খাক বা মাটি ১ অণু ও বাত বা বাতাস ১ অণুতে।ইহাকেই আল্লাহর পাঁচ জাত বা উপাদান বা ভূত বলা হয় ।আর এই ৫ অণুর সম্মিলিত রুপ বা ৫ অণু মিস্রন ১ অনু এক কোষী প্রাণী হতে।
প্রকাশ থাকে যে,যতক্ষন পর্যন্ত এই আগুন পানি মাটি বাতাস ও পরিস্কার কারী মৈথুনে একিভূত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সৃষ্টির শুরু হবে না।প্রকৃতির নিয়মে যখনই পাঁচটি অণু স্ব-স্ব অবস্থান থেকে গুণনের মাধ্যমে নিজেকে অন্য ভূতের সাথে একিভূত হয়ে পূণরাই এক অণুতে রুপান্তর হয়,তখন থেকেই সৃষ্টি শুরু হয়ে যায়।যেমন-
সৃষ্টি সুত্রটা এরুপ-
১।নূর বা সাফা বা পরিস্কার কারক অণু প্রাণ=১*১=১
২।পানি অণু প্রাণ=১*১=১
৩।আগুন অণু প্রাণ=১*১=১
৪।মাটি অণু প্রাণ=১*১=১
৫।বাতাস অণু প্রাণ=১*১=১
সর্বমোট পাঁচ অণু প্রাণ সম্মিলিত মৈথুণে এক অণুতে রুপান্তরীত হলেই পূণরুত্থান শুরু হয়ে গেলো।এখন সেই অবস্থানের নাম এককোষি প্রাণী বা জীব।
আর এই সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেলো আল্লাহর এবাদৎ বা উপাষনা।যেমন খাইতে হবে,খাইলে পায়খানা কেরতে হবে,খাবার সংগ্রহের জন্য শ্রম দিতে হবে,শ্রম দিলে বিশ্রাম নিতে হবে।আর এসকলই হচ্ছে দাসত্ব বা উপাষনা । সৃষ্টির এমন কেহই নাই যে স্রষ্টার উপষনা না করে ।
মূলতঃ স্রষ্টার উপাষনা হলো যাহা করলে নিজে শান্তিতে থাকা যাই।আর শয়তানের উপাষনা হলো যাহা করলে নিজে অ-শান্তিতে নিমজ্জিত হয়।
এই এক অণু প্রাণীর পূর্ণ দেহের মধ্যেই অবস্থান করে পাঁচ টি দেহ এবং দেহ সজীব রাখার সকল উপাদান।এবং তা থেকে নিজ নিজ দেহে যাহা উৎপত্তি হয় তাহার বিবরণ ।যেমন-
১।নূর বা সাফা বা পরিস্কার কারক অণু দিয়ে যাহা যাহা তৈরী হলো তার নাম।
১।দেহের নাম =ওয়াযেবুল।
২।রুহের নাম=কুদচি।
৩।নফসের নাম =রহমানি।
৪।রাহার নাম=অহেদানিয়াত।
৫।মোকামের নাম=অরা অল অরা।
৬।মঞ্জিলের নাম=হাহুত।
৭।মক্কেলের নাম=আজরাইল।
৮।ইমানের নাম=হুয়াল একিন।
২। আব বা পানি অণু দিয়ে যাহা যাহা তৈরী হলো তার নাম।
১।দেহের নাম =মোমতেনাল।
২।রুহের নাম=নাবাদাত।
৩।নফসের নাম =লোয়াম্মা।
৪।রাহার নাম=তরিকত।
৫।মোকামের নাম=মাহমুদা।
৬।মঞ্জিলের নাম=মলকুত।
৭।মক্কেলের নাম=মেকাইল।
৮।ইমানের নাম=এলমল একিন।
৩। আতশ বা আগুন অণু দিয়ে যাহা যাহা তৈরী হলো তার নাম।
১।দেহের নাম =মোমকেনাল।
২।রুহের নাম=হায়ানী।
৩।নফসের নাম =আম্মারা।
৪।রাহার নাম=শরিয়ত।
৫।মোকামের নাম=কাবকাউসিন।
৬।মঞ্জিলের নাম=নাসুত।
৭।মক্কেলের নাম=আজাজিল।
৮।ইমানের নাম=বেল গায়েব একিন।
৪।খাক বা মাটি অণু দিয়ে যাহা যাহা তৈরী হলো তার নাম।
১।দেহের নাম =আরেফেল।
২।রুহের নাম=যামাদাত।
৩।নফসের নাম =মোলহেমার।
৪।রাহার নাম=হকিকত।
৫।মোকামের নাম=সোলতানন নসিরা।
৬।মঞ্জিলের নাম=জবরুত।
৭।মক্কেলের নাম=জিবরাইল।
৮।ইমানের নাম=আইনাল একিন।
৫।বাত বা বাতাস অণু দিয়ে যাহা যাহা তৈরী হলো তার নাম।
১।দেহের নাম =অহেদাল।
২।রুহের নাম=ইনসানি।
৩।নফসের নাম =মোৎমাইন্না।
৪।রাহার নাম=মারফত।
৫।মোকামের নাম=আউদানা।
৬।মঞ্জিলের নাম=লাহুত।
৭।মক্কেলের নাম=ইসরাফিল।
৮।ইমানের নাম=হক্কোল একিন।

No comments:

Post a Comment