✫✫✫মৃত্যুর পুর পুনরুত্থান ও পুনঃজন্ম ✫✫✫
ইসলামে পুনঃজন্ম নেই। মৃত্যুর পর পুনরুত্থান ইহা বিশ্বাস করা ইমানের অংগ। মৃত্যু এবং পুনরুত্থান পরস্পর সংযুক্ত। যেমন ধরুন ভাল ও মন্দ। যেমন- মৃত্যু ঘটলেই উত্থান ঘটবে এবং উত্থান হতে হলে মৃত্যুর প্রয়োজন। মৃত্যু ও উত্থান নিয়মিত কালক্রম। “তেমারা মৃত ছিলে, পরে জীবিত করা হয়েছে, তারপর মৃত্যু দান করা হবে তারপর জীবিত করা হবে এবং পরিশেষে তাহার (আল্লাহর) দিকে ফিরে যাবে। --- সূরা বাকারা ২৮ আয়াত। এ আয়াতে বুঝা যাচ্ছে মৃত্যু ও জীবন পালাক্রম কাল এবং প্রতিটি জীবিতকে এই ক্রম অতিক্রম করতে হবে। কাজেই উত্থান মৃত্যুর সঙ্গে সংযুক্ত। যা খুবই রহস্যময়। মৃত্যু ও জীবনচক্রের শেষ পরিনতি আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়া।
--
সাধারণত মানুষের ধারণা- মানুষের রুহ দেহ থেকে চলে গেলে মৃত্যু হয়। কিন্তু কুরআন থেকে পাই “....রুহ হলো আল্লাহর আদেশ”। যেহেতু আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। তাহলে আল্লাহ যদি সর্বত্র থাকেন, তাহলে তার আদেশ রুহ যাবে কোথায়? আল্লাহ সর্বত্র অবস্থান করলে মৃত দেহের মাঝেও রুহ আছে। দেহ হতে কিছু চলে যায় না আবার দেহের মধ্যে কিছু বাহির থেকে কিছু আসেও না। কাজেই আল্লাহর অবস্থানসহ আল্লাহকে সঠিক উপলব্ধি না করলে এর মূল রহস্যে যাওয়া যায় না।
--
পুনরুত্থান কিভাবে হয় তা কুরআন মাজিদে বলা আছে- “আল্লাহ বায়ু প্রেরণ করে তা দিয়ে মেঘমালা সঞ্চলিত করেন, তারপর তিনি তা দিয়ে মাটিকে মৃত্যুর পর আবার জীবিত করেন। পুনরুত্থান এভাবেই হয়”। (৩৫:৯)
--
তরিকতী মুসলিম ভাইদের মধ্যেও পুনঃজন্ম বিশ্বাসী আছেন অন্যান্য ধর্মের মত। কিন্তু মৃত্যুর পুর পুনরুত্থান ও পুনঃজন্ম এক কথা নয়। পুনঃজন্ম বলতে বুঝায় একটি আত্মা কর্মফল অনুযায়ী বারবার দেহ বদল করা। এক দেহ ত্যাগ করে আরেক দেহ ধারণ করে। এভাবে চলতে চলতে স্বতসাধু হলে তাকে আর পুর্ব কর্মের জন্য ফল ভোগ করতে হয় না। মানে সোজ কথা খারাপ কর্ম করলে আবার নিকৃষ্ট প্রাণী (যেমন কুত্তা বিরাল) হয়ে জন্ম গ্রহণ করতে হবে বা বিভিন্ন স্তরে জন্ম নিতে হবে এবং মানব জনম উৎকৃষ্টস্তর। -এহলো সংক্ষেপে পুনঃজন্মের ধারণা। অনেকে আবার মনে করে বা বলে বেড়ায় পুনঃজন্ম ও পুনরুত্থান একই; শব্দের অর্থের পার্থক্য! আসলে কি তাই?
--
এবার আসুন একটু সমালোচনা করি। ইসলাম পুনঃজন্ম স্বীকার করে না বরং পুনরুত্থান স্বীকার করে। পুনরুত্থান কিভাবে হয় তা উপরে কুরআন অনুযায়ী বর্ণনা করেছি। আত্মা হচ্ছে আল্লাহ আদেশ। আল্লাহর আদেশ এক দেহ হতে আরেক দেহ ভ্রমন করে একেবারেই অযৌক্তিক ও অবাস্তব। আত্মাকে কেন্দ্র করে দেহ নয় বরং দেহকে কেন্দ্র করে আত্মা। তাই আত্মার দেহান্তর অসম্ভব। দেখুন কোন কুকুর কি মনে করতে পারে যে সে আগের জন্মে মানুষ ছিল বা অন্য কিছু? অথবা আপনি কি মনে করতে পারবেন আপনি আগের জন্মে কি ছিলেন? পৃথিবীতে কোন কাজ ২বার ঘটে না। আজ আপনি যে পথ দিয়ে আজ এসেছেন সে পথ দিয়ে হুবহু যেতে পারবেন না। এমনকি আপনার দুইটি স্বাক্ষরও এক হবে না। যা হয় পৃথিবীতে একবারই হয়। জন্মও একবারই। কোন প্রাণী, মানুষ, গাছ, পশু পাখীর কারও পুনঃজন্ম সম্ভব নয়। কাজেই মহা পবিত্র কুরআনে পুনঃজন্মের কথা নেই, আছে পুনরুত্থান।
“তিনি মৃত হতে জীবন্তের আবির্ভাব ঘটান এবং ভূমির মৃত্যুর পুর ওকে পুনর্জীবিত করেন। এভাবেই তোমরা উত্থিত হবে” (৩০:১৯)।
“মৃত্যুর পর তোমরা পুনরুত্থিত হবে” (১১:০৭)।
পরিষেশে বলা যায়, আত্মার জন্ম হয় না; জন্ম হয় দেহের। এছাড়া জন্ম ও সৃষ্টিও এক নয়। আদম সৃষ্টি আদম হতে মানুষের জন্ম। সুতরাং আত্মার কোন পুনঃজন্ম নেই।
No comments:
Post a Comment